আমাদের ভারত, ১৭ ফেব্রুয়ারি: সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-এর দাবিতে কর্মসূচিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। সামাজিক মাধ্যমে এটি কার্যত হুমকির পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। পোস্ট করে রীতিমতো কর্মবিরতি নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিতে তৈরি হয়েছে প্রতিক্রিয়া। পোস্ট করার ২১ ঘন্টা বাদে শুক্রবার বেলা ১টা পর্যন্ত ৯৫টি প্রতিক্রিয়া এসেছে। প্রতিটিতেই পাল্টা তোপ দাগা হয়েছে উদয়নকে।
ক্ষোভ প্রশমনে ডিএ ঘোষণার পর আরও তীব্রতর হয়েছে আন্দোলন। আগামী সোম ও মঙ্গলবার ২০ ও ২১ তারিখ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। ৪৮ ঘণ্টা সরকারি কর্মীদের এই কর্মবিরতিকেই তীব্র কটাক্ষ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।
উদয়নবাবুর পোস্টে বড় হরফে লেখা হয়েছে, “২০, ২১শে না এলে ২২শে বাড়িতেই থাকুন।”
এর প্রতিক্রিয়ায় শক্তিপদ দত্ত লিখেছেন, “খুব মাতব্বর‘ পারলে কর্মবিরতি আটকে দেখান।“ প্রতাপ সামন্ত লিখেছেন, “চোরের মায়ের বড় গলা।“ এজাজ আহমেদ লিখেছেন, “শুয়োর দেখেছি কিন্তু কোনোদিন শুয়োরের বাচ্চা দেখিনি, আজ দেখে নিলাম!”
সুজিত দেবাংশু শীল লিখেছেন, “কেন খামোখা গালাগালি খান! তার থেকে যেটা খাচ্ছেন সেটা খান (কাটমানি)।“ পৃথক মন্তব্যে তিনি লিখেছেন, “এর জন্য একদিন কান ধরে উঠবস করতে হবে।” রাখী রায় লিখেছেন, “কে তুমি নন্দিনী? আর সেই দিন নেই যে, এখন সবাই জেনে গেছে কারা চোর। পারলে আটকে দেখাস।“
প্রদীপ্ত সরকার লিখেছেন, “মাননীয়া, আপনি বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন ২০১০ সালে কর্মচারীদের সমাবেশে তো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেবেন রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের, আপনি ক্ষমতায় আসলে। এখন পালটি মারলে আমরা ছাড়বো কেন ম্যাডাম? এই মুখ দিয়েই তো আবার ত্রিপুরার সরকারী কর্মচারীদের বছরে দুইবার ডি এ দেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। লজ্জা লাগা দরকার। দিতে না পারলে পদত্যাগ করুন। আপনিই তো বলেছিলেন, যে সরকার কর্মচারীদের ডিএ দিতে পারে না, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। ভুলে গেলে তো চলবে না ম্যাডাম। তখন তো আপনে শাসক দলেই ছিলেন এখনও তো আপনে শাসক দলেই আছেন…. কিন্তু আপনি এখন বাটপার হয়ে গেছেন।“
বাবুল মণ্ডল লিখেছেন, “২৬ এর পর আপনি বাড়িতে বসে থাকবেন।” হাবিব মোস্তাফা লিখেছেন, “দুই কান কাটা।” সুশীল প্রধান লিখেছেন, “হুমকি দিচ্ছেন? কিছু দিন পর কোথায় লুকোবেন তার জায়গা পাবেন না। জনগণ জাগছে মনে রাখবেন। নির্লজ্জ এর মতো মুখ দেখান কি করে আগাগোড়া চোরের দল। ছিঃছিঃ।” বিশ্বজিৎ অধিকারী লিখেছেন, “আপনি আর কাকে কাকে থামাবেন? কারো কারো তো পা হাঁটু ভেঙ্গে দেবেন।”
প্রসঙ্গত, ডিএ-এর দাবিতে শহিদ মিনারে ২২ দিন ধরে চলছে সরকারি কর্মচারী ও অবসরপ্রাপ্তদের আন্দোলন। গত আটদিন ধরে বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে অনশনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন। রাজ্য বাজেট পেশের সঙ্গে ৩ শতাংশ বাড়তি ডিএ-এর ঘোষণাতে কোনওভাবেই সন্তুষ্ট নন সরকারি কর্মচারীরা। বিধানসভা অভিযানেরও ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

