পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৪ মার্চ: ইউক্রেনে চরম নিষ্ঠুরতার শিকার বালুরঘাটের জয়তী। সাহায্য করলো না স্থানীয়রাও। ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হল দক্ষিন দিনাজপুরের দুই মেডিকেলের ছাত্রীকে। জীবন বাঁচাতে দুই রাত ও তিন দিন হেটেই কিব শহর থেকে হাঙ্গেরিতে পৌছালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের অসহায় দুই তরুণী। ঘটনা জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লো পরিবার। কবে ফিরবে মেয়েরা, পথ চেয়ে এখন পরিবারের লোকেরা।
পরিবারের লোকেদের স্বপ্ন পূরণ করতে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যান বালুরঘাটের নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা দীপঙ্কর রায়ের বড় মেয়ে জয়তী রায়। যেখানে ডাক্তারী পড়ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারির পাঠান পাড়ার বাসিন্দা ঈশিতা খাতুনও। ২০১৯ সালে সে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়ে ইউক্রেনে পাড়ি দেয়। যদিও জয়তীর মেডিকেলের ছিল এটাই প্রথম বর্ষ। সেদেশের কিব শহরের একটি মেডিকেল কলেজে পাঠরত ছিল তারা। ১২ ফেব্রুয়ারি বালুরঘাট থেকে সেখানে পৌছায় জয়তী। এরই মধ্যে যুদ্ধের দামামা শুরু হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকদিন মেডিক্যাল কলেজ বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে আটকে থাকে তারা। বংশীহারীর ঈশিতার সাথে আটকে থাকে বালুরঘাটের জয়তী রায়ও। ইউক্রেনের কিব শহর থেকে হাঁটাপথে সীমান্ত পেরিয়ে হাঙেরিতে পৌছায় তারা।
তাদের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, প্রথমে তাঁরা ইউক্রেনের লিভইড স্টেশনে পৌঁছলে তাদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয় ইউক্রেন সেনা। পথে ইউক্রেনের স্থানীয়রাও তাদের কোনোরকম সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ করেছেন জয়তীর মা মনোরমা রায়। আর যার জেরে দুই রাত তিন দিন পায়ে হেঁটে হাঙেরী সীমান্তে পৌঁছলে সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিরা ও হাঙেরি সেনা তাঁদের রিসিভ করে। এই মুহূর্তে তাঁরা বুদাপেস্ট শহরের ভারতীয় একটি গেস্ট হাউজে ভারতীয় দূতাবাসের আশ্রয়ে রয়েছে। হাঙেরির সিম ক্রয় করতে না পারায় ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে বংশীহারিতে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছে। বালুরঘাটের নারায়ণপুরে তার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন মেয়ে জয়তীও। এখন কবে মেয়ে ঘরে ফিরবে সেই আশায় দিন গুনছেন পরিবারের লোকেরা। যদিও সুত্রের খবর, আজই তাঁদের নিয়ে ভারতীয় বিমান আকাশে উড়বে।
জয়তীর মা মনোরমা রায় ও ইশিতার বাবা আব্দুল রহমানরা বলেন, তাদের মেয়েদের সাথে চরম নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে ইউক্রেন সেনা। কথা হয়েছে মেয়েদের সাথে। বিমানে করে কখন ভারতে পৌছবে মেয়েরা আর কখনই বা তাদের দেখতে পাবেন, তারই প্রহর গুনছেন।