আমাদের ভারত, হুগলী, ২২ নভেম্বর: দুবছর আগের আতঙ্ক কি আবার ফিরছে গঙ্গা পাড়ের শহরে! সেই আতঙ্কেই হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রাচীন শহর শ্রীরামপুর। জেলার পাশাপাশি দুই শহরের বাসিন্দাদের ভরসা এখন ভগবান, কারণ ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার কার্যকলাপ অনেকটা তেমনই। এই শহরেই গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু কেড়েছে ফুটফুটে এক শিশুর প্রাণ। আক্রান্ত বহু। মহকুমা হাসপাতাল, বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে নামি ডাক্তার সব যায়গাতেই রোজই ভিড় করছেন বহু রোগী। প্রায় রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। রক্ত পরীক্ষা, চিকিৎসা সবই হচ্ছে, কিন্তু মশার ওপর নিয়ন্ত্রণ এখনও দূরঅস্ত। গতকাল এই জেলারই ভদ্রেশ্বরে এক যুবকেরও মৃত্যু হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার আচমকাই পৌর প্রতিনীধিদের তৎপরতায় এলাকার মানুষ হতবাগ, এহেন তৎপরতা দেখে নিজেদের মধ্যে বলা কওয়া শুরু করেন সাধারণ মানুষ। এতদিন পর টনক নড়েছে তাহলে। এদিকে মশক কুলের তান্ডব সামলাতে যে হিমসিম অবস্থা পুর প্রশাসনের তার নজির প্রতি মুহুর্তে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার যখন সদলবলে মশা মারতে ব্যস্ত শ্রীরামপুরের মাহেশ এলাকায়, তখন যারা মশার কামড়ে এখন রোগী হয়ে হাসপাতালে তারা এবং তাদের বাড়ির লোকজন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মশা একবার কামড়ালে রক্ষে নেই, কারণ যে হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা সেখানে ময়লার পাহাড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে সত্যিই মশা নিধনে এত বড় কর্মযজ্ঞ চলছে এই শহরে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জায়গায় জায়গায় স্তূপাকার করা হাসপাতালের বর্জ্য।
শ্রীরামপুর স্টেশনের পূর্বপাড়ে যখন মশা নিধন চলছে তখন পশ্চিম পাড়ে কোথাও ডাস্টবিন উপচে ময়লা রাস্তায় তো কোথাও ড্রেন বন্ধ হয়ে জল জমেই রয়েছে এক যায়গায়।
এসব নিয়ে বলার কোনোও উপায় দেখছেন না সাধারণ মানুষ। কারণ বলে লাভ কি! রাস্তা হয়েছে, ড্রেন হয়েছে আল বসেছে সুন্দর করার জন্য ড্রেন গুলির উপর
ঢালাইও হয়েছে। ফলে বাইরে তো সবই ঠিকঠাক। কিন্তু ঢালাই করা ড্রেনের তলায় কত মশা নিশ্চিন্তে বংশ বিস্তার করছে তার খবর কে রাখে! তাই মশা নিধন কর্মযজ্ঞ চলছে চলবে। আর বাড়িতে থাকতেই হোক বা রাস্তায় বেড়োতে হোক ক্রিম মেখে লোশন মেখে বেড়োনো ছাড়া উপায় দেখছেন না একদা ডেনিশ উপনগরীর পুর নাগরিকরা।