জয় লাহা, দুর্গাপুর, ২৯ সেপ্টম্বর: দুর্গাপুজোর আগে ফের খনি অঞ্চলে সক্রিয় মাদক পাচারকারীরা। লক্ষাধিক টাকার ব্রাউন সুগার সহ অন্ডালের কাজোড়া লছিপুর এলাকায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রায় ২৩ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ধৃতদের নাম, নিতীশ কুমার সাউ (গুলু) ও আকাশ ভুঁইঞা। দুজনেই কাজোড়ার লছিপুর কলোনীর বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তাদের আসানসোল জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন খারিজ করে দেন।
ঘটনায় জানাগেছে, বুধবার রাত দশটা নাগাদ কাজোড়া লছিপুর ক্যান্টিন সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই দুজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের মোটর সাইকেলের সিটের নীচ থেকে ব্রাউন সুগার উদ্ধার করে পুলিশ। বীরভূমের সিউড়ি থেকে ওই ব্রাউন সুগার তারা সংগ্রহ করেছিল বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন খারিজ করে দেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জুলাই মাসে পানাগড় -মোরগ্রাম সড়কের ওপর কাঁকসার হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন আন্ডারপাশে মাদক সহ দু’জন পুলিশ ও এসটিএফের জালে ধরা পড়ে। ধৃতদের সঞ্জীব ভক্ত নদিয়ার পলাশিপাড়ার বাসিন্দা, আর একজন বিধান বৈদ্য বাঁকুড়ার সোনামুখীর ডিহিপাড়ার বাসিন্দা। তাদের কাছে প্রায় ৯৭০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়, যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকার ওপর। এছাড়াও ১০২০ গ্রাম অ্যালপ্রাজোলাম উদ্ধার হয়েছে। এই নেশার ঔষধটি মূলত ঘুমের জন্য ব্যবহৃত হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের গোঁড়াতে কাঁকসার বনকাটির ১১ মাইল এলাকা থেকে প্রশান্ত রায় নামে এক মাদক পাচারকারী ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে ২৬০ গ্রাম ব্রাউনসুগার উদ্ধার হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। তার আগে ওই বছরই গত ৫ নভেম্বর দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মণিরুল শেখ নামে এক যুবককে প্রায় কোটি টাকার হেরোইন সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। নদিয়ার পলাশিপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা মণিরুল শেখ উত্তরপ্রদেশ থেকে এই মাদক পাচারের উদেশ্য নিয়ে দুর্গাপুর স্টেশনে নেমেছিল। দুর্গাপুর স্টেশনে নামার পর সেখান থেকে স্টেশন বাস স্ট্যান্ডের পিছনের রাস্তা ধরে বাইরে বেরিয়ে আসছিল। ওই সময় পুলিশ সন্দেহজনক ভাবে তাকে আটক করে। তার কথায় অসঙ্গতি থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তল্লাশি করতেই তার কাছ থেকে প্রায় ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়। তারপরই পুলিশ মণিরুলকে গ্রেফতার করে।
এছাড়াও ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ২৮০ গ্রাম হেরোইন ও আগ্নেয়াস্ত্র সহ তিনজন সুপারিকিলার ধরা পড়ে দুর্গাপুর বেনাচিতির উত্তরপল্লী এলাকায়। মাস কয়েক আগে ওড়িশা থেকে এরাজ্যে পাচারের আগে কোকওভেন থানার শ্যামপুর মোড় এলাকায় কয়েক লক্ষ টাকার গাঁজা সহ ধরা পড়ে পাচারকারীরা। তারপর পুজোর আগে এদিনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল পড়েছে শিল্পাঞ্চলজুড়ে।
প্রশ্ন এখানেই, একের পর এক ঘটনায় মাদক পাচারকারীদের কি স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে শিল্পাঞ্চল? যদিও পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের আদালতে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”