Flood, Ghatal, ঘাটাল দু-লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত, প্লাবিত কয়েক হাজার হেক্টর চাষের জমি, ক্ষতির মুখে গ্রামীণ এলাকার মানুষ

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ জুন: ঘাটাল মহকুমাজুড়ে এখন শুধুই হাহাকার। বাড়ির সামনে জল। কোনটা রাস্তা আর কোনটা জলাভূমি বোঝা দায়। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে স্রোত। যাতায়াতের অন্যতম ব্যবস্থা নৌকা। ডিঙি নৌকা নিয়ে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে চলেছেন সাধারণ মানুষ। ঘাটাল মহকুমাজুড়ে প্রায় দু-লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত। একাধিক পৌর এলাকা এবং গ্রামীণ এলাকা বন্যা প্লাবিত। শুধু তাই নয়, জেলা প্রশাসন এবং মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্ষার শুরুতে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। কয়েক হাজার হেক্টর চাষের জমি প্লাবিত। ক্ষতির মুখে গ্রামীণ এলাকার মানুষ। ইতিমধ্যেই রবিবার বিকেল থেকে ফের দুর্যোগের পূর্বাভাস। স্বাভাবিকভাবে সমস্যায় ঘাটালের মানুষ।

বর্ষা এলেই ঘাটালে বন্যা হবে এটা স্বাভাবিক রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিবছর। চলতি বছর প্রবল বৃষ্টি এবং বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ঘাটাল মহকুমার উপর দিয়ে বয়ে চলা একাধিক নদী টইটুম্বুর হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন দুর্বল নদী বাঁধ ভেঙ্গে বিপত্তি। প্লাবিত একাধিক এলাকা। বন্যা দুর্গত প্রায় দু’লক্ষাধিক মানুষ। ইতিমধ্যেই তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয় তার দিকে সচেষ্ট রয়েছে প্রশাসন।

রাজ্য সরকারের এসডিআরএফ, সিভিল ডিফেন্স এবং এনডিআরএফ উদ্ধার কার্য চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেছেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইঞা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়বেতার পর চন্দ্রকোনার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর ধীরে ধীরে ঘাটাল মহকুমার একাধিক জায়গা প্লাবিত হয়েছে। একাধিক অসুস্থ রোগী, সাধারণ মানুষ, প্রসূতি মায়েদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বন্যার কারণে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। সাপের কামড়ে বেশ কয়েকজন আহত অবস্থায় ভর্তি হাসপাতালে। এছাড়াও বন্যা দুর্গত মানুষদের খাবার, পশু খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় পোশাক বিলি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিভিন্ন জায়গায় খোলা হয়েছে অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি কিচেনও।

ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান যে, ইতিমধ্যে জল কমতে শুরু করেছে। ১৮৮টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। ২ লক্ষ্যেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই বন্যার কারণে। প্রায় দু’ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে এনে রাখা হয়েছে। চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকে একজন এবং চন্দ্রকোনা দু’নম্বর ব্লকে একজন মোট দু’জন লোকের মৃত্যু হয়েছে বন্যার জলে তলিয়ে গিয়ে। গর্ভবতী মহিলাদের উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প। জলমগ্ন হয়ে কোনভাবেই যাতে কেউ অসুস্থ হয়ে না পড়ে তার জন্যই এই ব্যবস্থা। দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ওআরএস। সরকারি উদ্যোগে চালু হয়েছে নৌকা পরিষেবা। গবাদিপশুর খাদ্য সরবারাহ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *