আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৩ ফেব্রুয়ারি :
হলদিয়ার ঝিকুড়খালিতে নৃশংসভাবে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া সুন্দরী মা ও মেয়ের পরিচয় উদ্ধার। গ্রেফতার দুই দুষ্কৃতি। আজ এক প্রেসমিট করে এই কথাগুলি জানান পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুড়খালি এলাকায় দুই মহিলাকে আগুনে দাউদাউ করে পুড়তে দেখে আতঙ্কিত হয়েছিল এলাকার মানুষ।
জল দিয়ে নেভানোর পর দুটি দেহাংশ, পোষাকের কিছু অংশ এবং মাথার চুলের বেঁচে যাওয়া টুকরো দেখে পুলিশ অনুমান করেছিল হতভাগ্য পুড়ে মৃত দেহ দুটি মহিলার। তাঁদের পরিচয় জানতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায় দুর্গাচক থানার পুলিশ।
পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়াতেও দুই মৃত মহিলার পোষাক ও চুলের বর্ননা দিয়ে পরিচয় সন্ধানের উদ্যোগ নেওয়া হয় জেলা পুলিশের তরফ থেকে।
আর এর ফলে সম্ভবতঃ সাফল্য পায় পুলিশ। মাত্র কয়েকদিনের চেষ্টাতেই এক্কেবারে অন্ধকারে থাকা ঘটনার পর্দাফাঁস করতে পারে পুলিশ। ১৮ তারিখ বিকেলে ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘন্টারও বেশি সময় পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যায় দুই সদস্যের ফরেনসিক দল।
এরপরেই বিভিন্ন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে এই দুই মহিলা হলেন নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রিয়া দে (২২) ও তাঁর মা রমা দে (৪০)। হলদিয়ার ঠিকাদার শেখ সাদ্দাম হুসেন এর সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল রিয়ার। কিন্তু সম্পর্কের অবনতি হওয়াতেই সাদ্দাম পরিকল্পনা করে মা ও মেয়েকে ডেকে এনে খুন বা অজ্ঞান করে পুড়িয়ে মারে।
তদন্তে নেমে পুলিশ সাদ্দাম ও তাঁর এক সঙ্গী শেখ মনজুরকে গ্রেফতার করে আজ। রবিবার ধৃতদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার সন্ধ্যে নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখার্জি সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওই দুষ্কৃতীরা মা ও মেয়েকে জ্যান্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অন্তত তাই লেখা আছে।
তবে মা ও মেয়ে নিউ ব্যারাকপুর থেকে কবে কি কারণে হলদিয়ায় এসেছিল তা এখনও পরিষ্কার নয়। জ্যান্ত অবস্থায় ঝিকুড়খালী নিয়ে গিয়ে পোড়ানোর আগে আচ্ছন্ন করেছিল কি না, নাকি তাঁদের মুখ বেঁধে গায়ে আগুন দিয়েছিল তাও এখন পরিস্কার নয়। এই ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কি না তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সুপারের ধারণা ধৃতদের জেরা করে সব সত্য সামনে আসবে।