আমাদের ভারত, ১৩ আগস্ট: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ালো আর জি কর মেডিকেল কলেজে। যে সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা সংঘটিত হয়েছিল তার সামনে শুরু হয়েছে সংস্কারের কাজ। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয় বাম ছাত্র যুব সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, প্রমাণ লোপাট করতেই এই সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হঠাৎ কেন এই উদ্যোগ নিয়েছে প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের অন্দরে। জানাগেছে, ওই স্থানে একটি রেস্টরুম তৈরি করা হবে।
শুক্রবার সকালে আর জি কর মেডিকেল কলেজের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ। প্রথমে আত্মহত্যা বলা হলেও পরে উঠে আসে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ। এই ঘটনায় গত কয়েক দিনে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। তার মধ্যে হাসপাতালে সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নানা মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছে। এরপর সোমবার সেই সেমিনার হলেরই পাশে একটি ঘর আঁচমকা ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে ঘরটি ভাঙ্গা হচ্ছে সেটি খুব একটা ব্যবহার হতো না, কিন্তু হঠাৎ সংস্কারের কারণ কী? জানা যাচ্ছে, সন্দীপ ঘোষের নির্দেশে এই ঘর ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন এবং কর্তৃপক্ষের একাংশ জানাচ্ছেন, আর জি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলের সামনে একটি ঘর ছিল, সেটাই ভাঙ্গার কাজ শুরু হয় সোমবার। সেই কাজ চলছিল পুলিশের উপস্থিতিতে। যদিও সোমবারে ওই ঘর ভাঙ্গার কাজ থামাতে বাধ্য হয় জাতীয় মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপে। কারণ আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সোমবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন কমিশনের কয়েক জন প্রতিনিধি। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেওয়াল ভাঙ্গা হচ্ছে দেখে সে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।
সূত্রের খবর, গতকাল থেকে ঘরটি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছিল। হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সন্দীপ ঘোষের নির্দেশেই কাজ হচ্ছিল। কিন্তু ধর্ষণ ও খুন যেখানে হল তার অল্প দূরত্বে একটি ঘর ভাঙ্গার জন্য কেন এত তাড়াহুড়ো শুরু হলো সেই প্রশ্ন উঠেছে আন্দোলনকারী থেকে পড়ুয়া চিকিৎসক সকলের মনেই। এই কাজের ফলে তথ্য প্রমাণ নষ্ট করার কোনো সম্ভাবনা থাকতে পারে। কেন এমন একটি কাজে তদন্তকারীরা বাধা দিলেন না? প্রশ্ন উঠেছে। পরে অবশ্য এই ঘর ভাঙ্গা ও সংস্কারের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
এদিকে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজিকর কান্ডের তদন্ত ভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে সিবিআই নিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে খবরে।
এদিকে বলা হয়েছে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটের মধ্যে চিকিৎসকদের কয়েকটি সংগঠনকে নিয়ে তৈরি হওয়া জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর বুধবার সব সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোর বন্ধের ডাক দিয়েছে। বাম ছাত্র যুবদের অভিযোগ, তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে তড়িঘড়ি সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে ডি ওয়াই এফ আই- এর রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, কোনভাবেই তারা প্রমাণ লোপাট করতে দেবে না। বিষয়টি নিয়ে তারা আরজি করে বিক্ষোভ দেখান। রাজ্য চিকিৎসকদের যৌথ সংগঠন জয়েন প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গল- এর তরফে বুধবার রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলির ওপিডি বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটের মধ্যে সেখানে কোনো সিনিয়র চিকিৎসক থাকবেন না।
It’s too much