সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৬ মে: যদি নির্দিষ্ট সময়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হয় তাহলে তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে শাসক দল তৃণমূল। আজ সকাল দশটায় বড়জোড়ায় এক কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই দলের নেতা কর্মীদের তাতিয়ে দিয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
গতকাল রাতে তিনি পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ায় আসেন। আজ সকালে বাঁকুড়ার মাচানতলা মোড়ে চা পে চর্চায় যোগ দেন। এরপর সকাল ১০টায় বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার বড়জোড়ায় একটি কর্মী সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। গাড়ি থেকে নেমেই দলীয় নেতা কর্মীদের উৎসাহিত করতে তিনি রং তুলি হাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দেওয়াল লিখন করেন। বড়জোড়া হাইস্কুলে কর্মিসভায় যোগ দেন। তারপর সন্ধে সাড়ে ৫ টার সময় ওন্দার নিকুঞ্জপুরে একটি জনসভা করেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ, প্রাক্তন সভাপতি সুজিত অগস্থি, বিধায়ক হরকালি প্রতিহার, যুব মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর, বড়জোড়া মন্ডল-১ সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষের এই জেলা সফর তারই অঙ্গ। এদিনের সভায় তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে দলের নেতা কর্মীদের লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে ৩৫ আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়ে গেছেন তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। তার জন্য বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর ২টি আসনেই ফের বিপুল ভোটে জিততে হবে।
দিলীপবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অলক মুখার্জি বলেন, বিজেপি অলীক স্বপ্ন দেখছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সরকার বা শাসক দলের কোনও ভূমিকা নেই। ভোট নির্ঘন্ট ঠিক করে নির্বাচন কমিশন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। কালিয়াগঞ্জে মৃতঞ্জয় বর্মন হত্যার দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে গেলেও এখনও তদন্ত শুরু হয়নি কেন, কিসের আতঙ্ক? জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সবাই আতঙ্কে আছি। যেখানে ১৩ বছরের একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হল। তারপর এদিকে গুন্ডা ওদিকে পুলিশ। পুলিশ আর গুন্ডা এক হয়ে গেছে। সেই কারণে এরাজ্যে সবাই ভীত। মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যু বিএসএফের গুলিতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেন, ওনার মাথারই ঠিক নেই এখন। সবাই দেখলো পুলিশ গুলি চালিয়েছে। পুলিশ কোর্টে গিয়ে বলল আমরা ভয় পেয়ে গুলি চালিয়েছি। উনি এখন বিএসএফের ভূত দেখছেন। এইসব ন্যাকামি চোকামি করে কদিন চলবে।
ময়না কান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওখানে ৩৬ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। মাত্র ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ময়নার পুলিশ ধরবে না। এই জন্যেই তো আমরা সেখানে আন্দোলন করেছি, বনধ করেছি। তিনি হুমকির সুরে বলেন, এভাবে চলতে পারে না। এজন্য সিবিআই তদন্ত চেয়েছি। মমতা চুপ করে রয়েছেন। ব্যবস্থা না হলে ফের বনধ ডাকবো। এর শেষ দেখে ছাড়বো বলে তিনি হুঙ্কার দেন।