ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে গোসাবা উপনির্বাচনে জয় তৃণমূলের

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ২ নভেম্বর: গত বিধানসভায় যেখানে তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্কর জিতেছিলেন ২৩৭০৯ ভোটে সেখানে এবার গোসাবা উপ নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল জিতলেন ১৪৩০৫১ ভোটে। ৮২০১৪ থেকে বিজেপির ভোট কমে দাঁড়াল ১৮৪২৩ ভোটে। ভোট কমলো বামেদেরও, ৪৮৭১ থেকে তাঁদের ঝুলিতে এবারে পড়ল মাত্র ৩০৭৮ টি ভোট। সব মিলিয়ে গোটা গোসাবা বিধানসভা জুড়েই বয়ে চলল সবুজ ঝড়। ১৬ রাউন্ড গণনার মধ্যে একবারও বিজেপি বা বামেরা চাপে ফেলতে পারেননি তৃণমূল প্রার্থীকে। প্রথম থেকেই প্রথম স্থানে ছিলেন তৃণমূলের সুব্রত।

গত ১৯ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী জয়ন্ত নস্করের মৃত্যু হয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে। সেই কারণে এই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশে গত ৩০ অক্টোবর এই কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। যার ফল ঘোষণা ছিল মঙ্গলবার। এদিন ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজে ভোট গণনা হয় এই কেন্দ্রের। গণনার প্রথম থেকেই বিজেপি প্রার্থীকে অনেকটা পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। শেষ পর্যন্ত তিনি পান ১৬১৪৭৪ ভোট। এতো বড় ব্যবধানে আগে কোনও দিন এই কেন্দ্র থেকে কোনও প্রার্থীই ভোটের লড়াই জেতেননি।

এই জয়কে সুব্রত গোসাবাবাসীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, “এই জয় গোটা গোসাবার মানুষের জন্য। আমি তাঁদের বিধায়ক নই, থাকতে চাই তাঁদের ভাই, বন্ধু, পরিবারের একজন হয়ে। গোসাবার উন্নয়নয়ই আমার একমাত্র লক্ষ্য।”

যদিও এত ব্যাপক ভোটের জয়কে মানতে চাইছেন না বিজেপি ও আরএসপি প্রার্থী। তাঁদের দাবি, ভোটের দিন দেদার ছাপ্পা হয়েছে।

বিজেপি প্রার্থী পলাশ রানা বলেন, “গোটা গোসাবা বিধানসভা জুড়েই ছাপ্পা মেরেছে তৃণমূল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপি কর্মীদের হুমকিও দিয়েছে। এটা ভোট হয়নি হয়েছে প্রহসন।”

আরএসপি প্রার্থী অনিল মণ্ডল বলেন, “যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজের জন্য বাইরে আছেন, তাঁদের ভোটও হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের লোকেরা বুথের ভিতরে শুধুই ছাপ্পা মেরেছে, না হলে এতো বড় ব্যবধানে জয় সম্ভব নয়।”

এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সুব্রত বলেন, “২৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে গোসাবায় ভোট হয়েছে। প্রতিটি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল। নিজেরা হেরে গিয়ে এখন এসব ভুল বকছেন। আবার ভোট করাক, এর থেকেই বেশি ব্যবধানে জিতবো।”

এদিন ভোট জয় নিশ্চিত হতেই বিজয় উল্লাশ শুরু করে দেয় তৃণমূল। শুধু গোসাবা বিধানসভা এলাকা নয়, পাশের বিধানসভা বাসন্তী, ক্যানিং পূর্ব ও ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রেও তৃণমূল কর্মীরা মেতে ওঠেন বিজয় উৎসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *