DRM, Khargapur, খড়্গপুরে বস্তি উচ্ছেদ শুরু করায় ডিআরএম- এর বাংলো ঘেরাও তৃণমূলের

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ জুন: পরপর বস্তি উচ্ছেদ শুরু করেছিলেন ডিআরএম খড়্গপুর। আর তার বাংলোকে বস্তির লোকজন দিয়ে ঘেরাও করে দিলেন তৃণমূল নেতারা। হুঁশিয়ারি দিলেন, ”বস্তির লোকজন যদি থাকতে না পারে আপনাকেও স্বাভাবিক থাকতে দেওয়া হবে না। বস্তিবাসীরা গৃহ হারালে, আপনারও জল, রাস্তা সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।” এই নিয়ে সকাল থেকে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শহরে। নিরাপত্তায় গার্ডেনরিচ থেকে অতিরিক্ত আরপিএফ নিয়ে যেতে হল রেলওয়েকে।পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হয় তীব্র ধ্বস্তাধ্বস্তি৷

গত কয়েক মাস ধরে খড়্গপুর রেল শহরের বিভিন্ন বস্তি উচ্ছেদ করে রেলের জায়গা উদ্ধার শুরু করেছিলেন নতুন ডিআরএম কে আর চৌধুরী। সেই সঙ্গে খড়্গপুর শহরের একাধিক রেলের এলাকায় প্রধান রাস্তাগুলিতে প্রাচীর দেওয়া শুরু করে রেল। এই নিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি শুরু হয় খড়্গপুর রেল শহরে। তারপরেই বস্তিবাসীদের সাথে প্রতিবাদে শামিল হন রেলকর্মী পরিবারের লোকেরাও৷ রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বাধা দিতে শুরু করে তৃণমূল।

বস্তি বাঁচাও সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। রেলের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তৃণমূলের নেতা ও কাউন্সিলরদের নামে মামলা শুরু হয়। পাল্টা তৃণমূলের নেতা- কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা মামলা করেছেন রেলওয়ে ডি আর এম ও এডিআরএম সহ রেলওয়ে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। বাগবিতণ্ডা অব্যাহত।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল আটটা থেকে খড়্গপুরের ডিআরএম- এর বাংলো ঘেরাও করার কর্মসূচি নেয় বস্তি বাঁচাও সংগ্রাম কমিটি। খবর পেয়ে খড়্গপুরের আরপিএফ ছাড়াও রেলের হেডকোয়ার্টার গার্ডেনরিচ থেকে অতিরিক্ত বাহিনী এনে ডিআরএম বাংলো সংলগ্ন এলাকায় দুই প্রান্তের রাস্তা টিন ও ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেয় রেল পুলিশ। বুধবার সকাল থেকে চলে তীব্র উত্তেজনা। ব্যারিকেডের সামনেই ধর্না শুরু করেন তৃণমূলের নেতৃত্বে বস্তি বাঁচাও সংগ্রাম কমিটি৷

বুধবার সকাল ৮টা থেকে চলা বিক্ষোভ প্রায় তিনঘন্টা চলার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় রেল পুলিশ৷ জোর করে অবস্থান আন্দোলন সরাতে গেলে তীব্র ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়ে যায়৷ হালকা লাঠি চার্জ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ কমিটির৷ ঘটনায় স্থানীয় নেতৃত্বে থাকা অসিত দাস অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে।

আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ”রেল তার সব জায়গা দখল করবে বলছে। সব জমি নাকি তাদের। এই জমি রাজ্য সরকারের। সেখানে মানুষ যদি স্বাভাবিক বিচরণ করতে না পারে তাহলে আমরাও রেলের এই অফিসারদের স্বাভাবিক থাকতে দেবো না। রেলওয়ে আধিকারিক, রেলের কর্মী সকলের জন্য জল আসে কংসাবতী নদী থেকে। রাজ্য সরকারের রাস্তার উপর দিয়ে সেই জলের লাইন এসেছে। আমরাও সেগুলি বন্ধ করে দেব। রেলের নিকাশি নালার জল পৌরসভার এলাকার উপর দিয়ে যায়। আমরাও তাহলে তা বন্ধ করে দেবো। অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। না হলে আমরা আপনাকে আপনার বাংলোর মধ্যেই একটি কথা করে দেব।”

পাল্টা ডিআরএম‌ কে আর চৌধুরী জানিয়েছেন, ”এটা এমন একটা রাজ্য যেখানে দখলদারদের, প্রশাসন সহযোগিতা করে। আমরা নিয়ম অনুযায়ী উচ্ছেদ করতে গিয়েছি। আমাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার নিজের নামেও মামলা করা হয়েছে। আলোচনায় ডেকেছি কেউ আসছেন না। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ করবো। অফিসের সিদ্ধান্ত অফিসে বলা ঠিক ছিল। বাংলো ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত ভুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *