আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১০ মে: ঘাটালের সংসদ অভিনেতা দেবের জেঠতুতো ভাইকে ত্রাণ না দিয়েই ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। “সাংসদের ভাইকে আবার কিসের ত্রাণ”! এমন উপহাস করে দেবের জেঠুর ছেলে বিক্রম অধিকারীকে এক প্রকার তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর ফলে ষাটোর্ধ্ব বিধবা মা এবং এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বিক্রম ও শম্পার সংসারে দুদিন হাঁড়ি চড়েনি বলে জানা গেছে। ত্রাণ না দিয়ে বিক্রমকে স্থানীয় তৃণমূলের প্রধান ও নেতাদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং দুদিন ভাতের হাঁড়ি না চড়ার খবর পেয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব তার বাড়িতে চাল, আটা ও নগদ কিছু টাকা দিয়ে আসেন। এই সাহায্য পেয়ে দেবের জেঠিমা শংকরী দেবী বলেন, যাই হোক দুদিন পরে বাড়ির ছেলে মেয়েরা পেট ভরে দুটো খেতে পাবে।
মেদিনীপুর থেকে পঁচিশ কিলোমিটার দূরে কেশপুরের মহিষদা গ্রামে দেবের বাবা গুরুপদ অধিকারী এবং তার তিন জেঠু শক্তিপদ, বিষ্ণুপদ, তারাপদ অধিকারী একসঙ্গে স্কুলে পড়াশোনা খেলাধুলা করে বড় হয়েছেন। দেবের মেজ জেঠু বিষ্ণুপদবাবুর একমাত্র ছেলে বিক্রমের অভাবের সংসার। বাবা মারা যাওয়ার পর বেসরকারি বাসে হেল্পারের কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান। লকডাউনে বাস বন্ধ থাকায় তিন-চারদিন অন্যের জমিতে স্ত্রীর সঙ্গে ধান কেটে ক’দিন ফ্যান ভাত খেয়ে কাটিয়েছেন বলে বিক্রম জানান। তিনি বলেন, গ্রামের অন্যান্যদের সঙ্গে রেশন কার্ডের আবেদন জানিয়েও ডিজিটাল কার্ড তারা পাননি। কিন্তু রেশন কার্ড যারা পাননি তারাও রেশন পাবে বলে সরকার ঘোষণা করায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গিয়েছিলাম, কিন্তু তুই হলি সাংসদের ভাই, তোর আবার ত্রাণের কিসের প্রয়োজন ইত্যাদি উপহাস করে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এরপর স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব কিছু চাল আটা ও নগদ টাকা দিয়ে যান।
এ বিষয়ে তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব কিছু মন্তব্য করতে চাননি। তবে দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানিয়েছেন, কোনও রকম রাজনীতির রং না দেখে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্ত এবং বিডিও (কেশপুর) দীপক ঘোষ জেলা শাসকের নির্দেশে বিক্রম অধিকারীর বাড়িতে গিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন। তাছাড়া বিক্রমের মায়ের ভাতা, রেশন কার্ড ও বাড়ির ব্যাবস্থা অতিসত্বর করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্ত।