আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২ ডিসেম্বর: বন্দফতরের বন সহায়ক পদে অস্থায়ী নিয়োগে স্বজনপোষন ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এবার রাজ্যের শাসক দলের নেতা সহ বনবস্তিবাসীরা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভে সামিল হলেন। বুধবার জেলাসদর সংলগ্ন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দমনপুর পূর্ব ও পশ্চিম দুটি রেঞ্জ অফিসে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা দলীয় ঝান্ডা লাগিয়ে বনবস্তিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। বনবস্তীবাসীদের সাথে দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় ঝান্ডা নিয়ে এইভাবে বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তারজন্য দলীয় কর্মীদের চিহ্নিত করে কড়া ব্যবস্থা নেবার হুশিয়ারি দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব।
অন্যদিকে বনকর্তারা অবশ্য স্বজনপোষন ও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য, বন সহায়ক পদে অস্থায়ী নিয়োগের কাজ চলছে। সেই নিয়োগে এবার বহিরাগত ও বনকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে প্রথমে তৃণমূল কর্মীরা দলীয় ঝান্ডা লাগিয়ে দেয় বক্সার দুটি রেঞ্জ অফিসে। রেঞ্জ অফিসের সামনেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। তৃণমূল কর্মীদের সাথে বিক্ষোভে সামিল হয় রাজাভাতখাওয়া পঞ্চায়েতের স্থানীয় বিভিন্ন বনবস্তির বাসিন্দারাও। রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজাভাতখাওয়া অঞ্চলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি অ্যালবার্ট সাংকা এবং তৃণমূল কংগ্রেস অনুমোদিত ডুয়ার্স ফরেস্ট ভিলেজার্স ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য। বিক্ষোভ চলে দুপুর পর্যন্ত।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে সম্প্রতি যে ১৬০জনকে অস্থায়ী পদে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে তাদের বেশীরভাগই বহিরাগত। নয়ত বনদফতরের কর্মীদের আত্মীয়স্বজন। সেখানে স্থানীয় বনবস্তিবাসী যুবকদের প্রাধান্যই দেওয়া হয়নি।বনবস্তিবাসীর মাত্র ১৩জন যুবক এই নিয়োগে সুযোগ পান। অ্যালবার্ট সাংমা জানান,“বন সহায়ক পদের নিয়োগে বনবস্তিবাসীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন বন সহায়ক পদে স্থানীয় বনবস্তিবাসীদের প্রাধান্য দিতে হবে। অথচ এই নিয়োগে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বহিরাগত ও বনদফতরের আমলাদের আত্মীয়স্বজনদের। এটা মানা যায়না।”
অন্যদিকে গৌরাঙ্গবাবু বলেন,“এই বিক্ষোভ দেখিয়ে আমরা কোনও অন্যায় করিনি। কারণ আমাদের দল সরকারে আছে ঠিকই কিন্তু আমাদের আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়।আমাদের আন্দোলন এই নিয়োগে স্বজনপোষন ও বনদফতরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই দুর্নীতির সঠিক তদন্ত না হলে আগামী দিনে আলিপুরদুয়ারে ক্ষেত্র অধিকর্তার অফিস ঘেরাও করা হবে বলেও হুমকি দেন গৌরাঙ্গবাবু। তবে সরকারি দফতর অবরুদ্ধ করে এইভাবে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় ক্ষিপ্ত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী জানান,“রেঞ্জ অফিসে বিক্ষোভ দলীয় কোনও কর্মসূচি নয়। সরকারি অফিস অবরুদ্ধ করে এভাবে দলের কর্মীদের অন্দোলন সমর্থন করেনা দল। এই বিক্ষোভ আন্দোলনে কারা জড়িত ছিল তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি ব্লক সভাপতিকে, ব্লক সভাপতির রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর কড়া ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে এই অভিযোগ ও বিক্ষোভ আন্দোলন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত।