Jadavpur University, TMC, যাদবপুরের পিএফ ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় তৃণমূল-মনোনীত প্রার্থীর

আমাদের ভারত, ৫ আগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভিডেন্ট ফান্ড ট্রাস্টি বোর্ডের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে হারলেন তৃণমূল-মনোনীত প্রার্থী। বিজেপি মনোনীত প্রার্থীর ফলও আশানুরূপ নয়। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থী।

প্রদত্ত ভোটের ৮৬%-এরও বেশি ভোট পেয়েছেন কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৪১১। বিজেপি’র শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ ৩৬টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। তৃতীয় হয়েছেন ওয়েবকুপা সমর্থিত অধ্যাপক লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২৩, শতাংশের হিসেবে ৪.৮৬%।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএফ ফান্ড পরিচালনা করে আইনীভাবে নিবন্ধীকৃত ট্রাস্টি বোর্ড। এই ট্রাস্টি বোর্ডে থাকেন নির্বাচিত দু’জন শিক্ষক প্রতিনিধি এবং একজন শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি। একজন শিক্ষক প্রতিনিধির অবসরগ্রহণের পর সেই পদে মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫৮৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ৪৭৩ জন ভোট দেন। শতাংশের হিসেবে যা ৮১%-এরও বেশি।

নির্বাচনী প্রচারের সময় দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এক, কাদের হাতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জমানো টাকা সুরক্ষিত থাকবে। দুই, পিএফের টাকা রাজ্য সরকারের হাতে চলে যাবে কিনা। পাশাপাশি HRMS চালুর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনের উপর আক্রমণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

বিশেষত দিন-কয়েক আগে রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মীদের পেনশনসহ অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা নিজেদের হাতে নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ বের করেছে। এই বিষয়টিও প্রচারে আসে এবং রাজ্য সরকারের এই প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করা হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের নির্লজ্জ নিদর্শন হিসেবে এর বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমেছে।

নির্বাচনের ফলাফল থেকে পরিষ্কার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই ইস্যুগুলোতে দ্বিধাহীনভাবে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। তাঁরা মুক্তমনা প্রগতিশীল শক্তিকেই সমর্থন করেছেন। এতকাল যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএফ ফান্ড সাফল্যের সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে, সে কথাই এই ফলাফলে প্রমাণিত। তাছাড়া পিএফসহ শিক্ষকদের আর্থিক সু্যোগ সুবিধার ক্ষেত্রে তাঁরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের প্রশ্নে কোনোরকম আপোষের বিরোধী এই ফলে সে কথাও স্পষ্ট।

গণতন্ত্রের স্বার্থে শিক্ষকদের এই দ্বিধাহীন সাহসী মতামত দুর্নীতি বিরোধী, স্বাধিকারের লড়াইকে আরও জোরদার করবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজকে অভিনন্দন জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন ট্রাস্টি মেম্বার অধ্যাপক কেশব ভট্টাচার্য রাজ্যের শিক্ষকদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে এই ফলাফল ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে উল্লেখ করেন এবং যাদবপুরের শিক্ষক সমাজকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *