আমাদের ভারত, ১১ এপ্রিল: জাতীয় দলের মর্যাদা লাভের মাপকাঠিতে ঠাঁই হল না বাংলার শাসক দলের। এই খবরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। জাতীয় দলের তকমা হারানোর পর দিনই তৃণমূল সাংসদের ইস্তফা। রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন লুইজিনহো ফালেইরো।
তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেছেন, “দলটাকে ব্যান করে দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া উচিত।” একটি সংবাদ চ্যানেল সোমবার সন্ধ্যায় খবরটি সম্প্রচার করে। এর ১৯ ঘন্টা বাদে, মঙ্গলবার বেলা সওয়া পাঁচটায় লাইক, মন্তব্য ও শেয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৮০০, ১ হাজার ৫০০ ও ৩৪৮টি। মন্তব্যের সিংহভাগে আনন্দ প্রকাশ এবং রাজ্যের শাসক দলের প্রতি সরাসরি ব্যঙ্গ বিদ্রুপ। আন্যান্য পোস্টেও সাড়া পড়েছে যথেষ্ঠ। সঙ্গে হরেক মুখভঙ্গির অভিব্যক্তি (স্মাইলি)। অনেকেই মন্তব্য করেছেন ‘শুভনন্দন’।
প্রতিক্রিয়ায় শুভজিৎ ভট্টাচার্য লিখেছেন, “ইতনি খুশি, ইতনি খুশি …এবার রাজ্যের দলের তকমাটা যেন হারায়।” রূপম দাশগুপ্ত লিখেছেন, “একটা আন্তর্জাতিক মানের দলকে জাতীয় দলের তকমা না দেওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” প্রণব ঘোষ লিখেছেন, “আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে…! সকলকে আগাম শুভ-নন্দন বর্ষ।”
শ্যামল ভরদ্বাজ লিখেছেন, “আবারও অনেক খরচা ‘ জাতীয়’ কথা সবকিছু থেকে মোছবার জন্য…. আবারও না কোনও ঘোটালা হয়!” রুচিরা রায় গাঙ্গুলি লিখেছেন, “যেমন কর্ম তেমন ফল।” প্রকাশ মাইতি লিখেছেন, “তাহলে ভাইপো কী এবারে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে জেলা সাধারণ সম্পাদক হবে?” কালীপদ মণ্ডল লিখেছেন, “নির্বিঘ্নে ভোট হলে আঞ্চলিকটাও থাকে কি না ?” সুদীপ্ত সরকার লিখেছেন, “নতুন দলের নতুন ভোর তৃণমূলের নতুন চোর।”
রুস্তম আলি লিখেছেন, “টুকলি করে সব সময় ভালো রেজাল্ট করা যায় না।” এস দত্ত দাঁ লিখেছেন, “আহারে সবে অন্য রাজ্যগুলোতে চুরির মতলব আঁটছিল”। আনন্দ ধারা লিখেছেন, “মন খারাপ করবেন না, আপনাদের দলের আগে জাতীয় লেখাটা মুছে গেলেও চোর লেখা তো যুক্ত হয়েছে? এটাই তো আপনাদের নৈতিক জয় হয়েছে।” সুব্রত মাল লিখেছেন, “জোড়া ফুলের বৃন্ত দুটো শুকিয়েছে মাত্র। এবার ঝড়ে পড়া, সময়ের অপেক্ষা।” হারাধন মুখার্জি লিখেছেন, “ডাং ডাং এপাং অপাং ঝপাং।”
সুদীপ্ত বসু লিখেছেন, “এই সব খবরে কান দেবেন না! সর্বভারতীয় তকমার ওপরে কয়লা, গোরু পাচার নির্ভর করে না! ফাঁকা ওএমআর শিটে চাকরি পাইয়ে দিতে টাকা তোলার ক্ষেত্রেও কোনো সমস্যা হয় না। বরং লোকাল দল হিসাবে লোকালি তোলাবাজি করতে সুবিধা।” লিটন চন্দ্রনাথ লিখেছেন, “এখন আদালতে যান, মুখে চুন কালি মাখান। এই ছাড়া তো আর কোনো পথ নেই। এখনও পর্যন্ত আদালতে কোনো প্রকার মামলায় জিততে পারলেন না, এই পর্বে আরও এক বার চেষ্টা করে দেখুন।”
তৃণমূল সমর্থকরাও চুপ করে বসে নেই। মহম্মদ কালাম লিখেছেন, “দম থাকলে এরকম দল গঠন করে ভোটে লড়ুক দিলীপ ঘোষ, দেখবো।” তাপস কুমার মিত্র লিখেছেন, “সেরেছে! এবার কি তাহলে সর্বভারতীয় দল হয়ে একটা পাতি আঞ্চলিক দলের কাছে হেলায় হারতে হবে? ধুস্! কি সব যে হচ্ছে, বোঝা দায়।”
এইচ এম মণিরুল লিখেছেন, “বিজেপি একটা এমন দল যে এরা যেখানে যায় সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরা যেটাই চায় সেটা করতে পারে। ইলেকশন কমিশন তো বিজেপির কথায় ওঠে বসে। ইলেকশন কমিশন বলে আলাদা কিছু আছে? এরা যেটাই চায় সেটাই করতে পারে। এদের চাই যেটা সেটা যেভাবেই হোক ওরা করতে পারে।”
মহম্মদ ওয়াদুল লিখেছেন, “তৃণমূল তো আঞ্চলিক দল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনটে জাতীয় দল। একটাকে ল্যাজেগোবরে করে হারিয়ে দিয়েছে। বাকি দুটোকে শূন্য বানিয়ে দিয়েছে। যারা শূন্য তারা এতেই খুশি ভক্তদের মতো।“ মল্লিকা ভট্টাটার্য লিখেছেন, “আঞ্চলিক দল বলে সবাই ঠাট্টা তামাশা করছেন। বলি ভুলে যাবেন না যে এই দলটিই দুটো সর্বভারতীয় দলকে গো হারা হারিয়েছে দু’ দুবার, ভুললে চলবে?”