আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১ মার্চ : রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করে ব্লক সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন আগেই। কিন্তু দল তাকে ছাড়তে নারাজ। কিন্তু এবার পাকাপাকিভাবে দল ছেড়ে ঠাকুরের আদর্শ প্রচারের জন্য সময় দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন বিভাস চন্দ্র অধিকারী।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে দিন কয়েক থেকেই সংবাদের শিরোনামে তৃণমূলের বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লক সভাপতি বিভাস চন্দ্র অধিকারী। তিনি নিজের গ্রাম কৃষ্ণপুর গ্রামে ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের সুবিশাল আশ্রম গড়ে তুলেছেন। ঠাকুরের জন্মস্থান বাংলাদেশের হিমাইতপুর গ্রামের মন্দিরের আদলে মন্দির গড়েছেন বিভাসবাবু। তাই গ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে নব হিমাইতপুর। আপাদমস্ত ঠাকুর ভক্ত বিভাসবাবু সিউড়ি সদরের চন্দ্রপুর গ্রামেও ঠাকুরের আশ্রমের পাশাপাশি একটি মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তুলছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার জমি কেনাবেচার জন্য রাজস্ব মকুব করে দিয়েছেন।
কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না বিভাস চন্দ্র অধিকারীকে। মাস দুয়েক আগে তাঁর কলকাতার বৈঠকখানা রোডের বাড়ি ইডি সিল করে দিয়েছিল। মঙ্গলবার সেই বাড়ির দরজা খুলে তদন্ত করে ইডি। বিভাসবাবু বলেন, “ইডি আমার সমস্ত কাগজপত্র দেখে খুশি। তারা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আমি সিবিআই এবং ইডির তদন্তে খুশি। আমাকে যতবার ডাকা হবে আমি হাজিরা দিতে প্রস্তুত। তবে আবারও বলছি আমি নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত নই। যারা আমার নাম মুখে আছেন তারা আমাকে চেননও না। আমিও তাদের চিনি না। তবে আমার ডিএড কলেজ থাকার সুবাদে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।”
রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “রাজনীতি এবং ঠাকুরের সেবা একসঙ্গে হয় না। তাছাড়া ঠাকুর বলেছিলেন আর্য ভারতবর্ষ গঠন করতে হবে। ২০১৯ সালে আমার বড়সড় পথ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠাকুরের কৃপায় বেঁচে রয়েছি। এখনও আমার চিকিৎসা চলছে।”
কলকাতার বাড়ি সিল খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে বিভাসবাবু বলেন, “ওই ফ্ল্যাট ঠাকুরের নামে রয়েছে। গ্রামগঞ্জ থেকে যে সমস্ত সদস্য চিকিৎসা জন্য কলকাতায় যান তাদের ওই ফ্ল্যাট মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাছাড়া আমিও চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওখানেই থাকি। তাই ইডির কাছে ফ্ল্যাটের সিল খুলে দেওয়ার আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইডি ফ্ল্যাটের সিল ভেঙ্গে খুলে দিয়েছে। প্রতিবেশীরা যে ট্রাকের কথা বলছেন সেটা ওষুধের প্যাকেট।”