স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১৬ অক্টোবর: তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে গুলিবিদ্ধ হল এক তৃণমূল নেতা। ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিজয়া সম্মেলনে রাজ্য তৃণমূলের যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ যোগ দিতে যাওয়ার আগের রাতেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার থানারপাড়া থানার পিয়ারপুর গ্রামে। ঘটনায় অভিযুক্ত সাইফুল মন্ডল ওরফে গুট্টু নামে এক তৃণমূল নেতা। তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান হাসিবুল রহমান মণ্ডল’কে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সেই গুলি তার পায়ে লাগে বলে অভিযোগ। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নতিডাঙ্গা গ্রামীন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে তার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় বহরমপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই ঘটনায় জড়িত সাইফুল সহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ঘটনার সূত্রপাত বেশ কিছুদিন আগে। থানারপাড়া থানার ওসির বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে থানায় গণস্বাক্ষর জমা দেওয়া হয়। এর নেতৃত্ব দেন তৃণমূল নেতা সাইফুল ইসলাম মন্ডল। গতকাল করিমপুর সার্কেল ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে থানায় আলোচনা চলছিল। সেই সময় কিছু সই সন্দেহজনক হওয়ায় কয়েকজন গ্রামবাসীকে থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয়। সাইফুল ইসলাম মন্ডল ও তার দলবল তা জানতে পেরে তাদের হুমকি দেয় যে, তারা থানায় গিয়ে যেন বলে ঐ সই তাদের। গ্রামবাসীরা থানায় গিয়ে বলেন, ঐ সই তাদের নয়। তারা অভিযোগ করেন তাদের সই জাল করা হয়েছে। অভিযোগ, এরপর তারা যখন গ্রামে ফিরছিল সেই সময় রাস্তায় সাইফুলের নেতৃত্বে কয়েকজন তাদের পথ আটকায়। তারা তাদের হুমকি দিতে থাকে যে তারা থানায় গিয়ে যেন বলে ওই সই তাদের। এরপর ওই গ্রামবাসীরা ভয়ে শিয়াপুর পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নেয়। অভিযোগ, কিছু সময় পর যখন তারা ওই ক্যাম্প থেকে বাড়ি ফিরছিল সেই সময় একদল দুষ্কৃতী তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতা হাসিবুল সহ আরো দু’জনের গুলি লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় থানারপাড়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরপর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুটতে থাকে দুষ্কৃতীরা। ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়। তাদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মীর অবস্থা আশঙ্কা জনক।

এর কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় ও তল্লাশি চালিয়ে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও বোমার কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে নয় জনকে গ্রেফতার করেছে থানারপাড়া থানার পুলিশ।

