রাজেন রায়, কলকাতা, ২ জানুয়ারি: কয়লা পাচার কান্ডের তদন্তে যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের নাম উঠে আসার পর থেকেই অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও সাড়ে তিন মাস আগে থেকেই দুবাইয়ে পালিয়েছেন বিনয়। তবে বাজেয়াপ্ত করা ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোন থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। আর এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবারে তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
বিনয় মিশ্রের বাড়ির তিনটি ঠিকানা এবং অফিস হানা দিয়ে ৩টি ল্যাপটপ ও ৩টি স্মার্টফোন বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। সিবিআই টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ দলের দাবি, সেপ্টেম্বর মাসে ওই ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডেটা মুছে দেওয়া হয়। ডিলিট করে দেওয়া হয় হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট। তবে মুছে দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এখনও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সেগুলি পুনরায় উদ্ধার করার জন্য চণ্ডীগড়ের সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, কয়লা পাচার নিয়ে সিবিআই তদন্ত ভার হাতে নেওয়ার আগেই বেপাত্তা হয়ে যায় বিনয়। কয়লা পাচার এবং গরু পাচার কান্ডের টাকা এই যুব তৃণমূল নেতার মাধ্যমেই তৃণমূলের কোনো প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার হাতে পৌঁছে দেওয়া হতো এমনটাই মনে করছেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ী বিনয় মিশ্রকে ৪ জানুয়ারি নিজাম প্যালেসে হাজিরার জন্য ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। তবে প্রাথমিকভাবে জানতে পারছেন, দুবাইতেই পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে এই মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়াও। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, গবাদি পশু পাচার, বেআইনি কয়লা পাচার থেকে শুরু করে রাজ্যে বিভিন্ন বেআইনি কারবারের কাটমানি বিনয়ের হাত ধরেই পৌঁছত কলকাতার ওই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের হাতে। চক্রের কিংপিন অনুপ মাঝির সহযোগীদের জেরা করে গোয়েন্দাদের ধারণা, দুবাইয়ে বিনয় বা তার রাজনৈতিক ‘মেন্টরের’ ব্যবসায়িক যোগ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই সম্ভবত দুবাই বা আরব আমিরশাহির কোনও জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে বিনয়। সিবিআই আধিকারিকদের ইঙ্গিত, বিনয়ের হদিশ পেতে প্রয়োজনে বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য নিতে পারেন।