আমাদের ভারত, নদিয়া, ২১ নভেম্বর: তৃণমূল নেতার দাদাগিরি! চোর অপবাদ দিয়ে এক যুবককে দফায় দফায় মারধর, গুলি করে প্রাণে মারার হুমকি। অপমান ও ভয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা।। বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ওই যুবক। ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত চার নম্বর ওয়ার্ডের। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনুপ দেবনাথ। পেশায় দিনমজুর। ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সোনা ঘোষের বাড়িতে এসে কয়েক মাস ধরে সে কাজ করত।
জানা যায় দু’দিন আগে পাঁচিল করার জন্য সোনা ঘোষের বাড়িতে সে জঙ্গল পরিষ্কারের কাজ করছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল সোনা ঘোষ নিজেই। সেখানেই সোনা ঘোষ তার আঙ্গুলের একটি সোনার আংটি খুলে কাজ করছিল। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পর সেই আংটি নিতে সে ভুলে যায়। পরবর্তীকালে মনে পড়লে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও সেই আংটি আর সে পায়নি। পরবর্তীকালে ঐ দিনমজুর অর্থাৎ অনুপ দেবনাথের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে সে আংটি পেয়েছে কিনা, অনুপ দেবনাথ জানান সে কোনো আংটি সেখানে পায়নি। পরের দিন সোনা ঘোষের সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার জন্য কলকাতায় চিকিৎসা করাতে চলে যায় অনুপ দেবনাথ। পরবর্তীতে অনুপ ঘোষের পরিবার অভিযোগ তোলেন যখন সে বাড়িতে আসছিল শান্তিপুর স্টেশনে নামতেই সোনা ঘোষের ভাই এবং ম্যানেজার তাকে স্টেশন থেকে মারতে শুরু করে। পরবর্তীকালে দুই তিন দফায় এই মারধর চলে। অনুপ দেবনাথ ভয়ে এবং আত্মসম্মানে অবশেষে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বর্তমানে সে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি।

অনুপ দেবনাথের পরিবারের অভিযোগ, এই সোনা ঘোষ তৃণমূল নেতা। এলাকায় তার যথেষ্ট দাপট রয়েছে। এই সোনা ঘোষ হুমকি দেয় আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে রেল লাইনে ফেলে দেবে। সেই ভয়ে, আতঙ্কে আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে চায়। আমি চাইছি প্রশাসন এর সঠিক ব্যবস্থা করুক।
যদিও অনুপ দেবনাথের পরিবারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল নেতা সোনা ঘোষ। তিনি বলেন, আমার আংটিটির মূল্য ছিল কয়েক লক্ষ টাকা। আমি শুধুমাত্র তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আংটিটি সে পেয়েছে কিনা। আর গুলি ও মার দূরের কথা, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি চাইলে ওর বিরুদ্ধে অনেক আগেই আইনত ব্যবস্থা নিতে পারতাম।
অন্যদিকে ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন শান্তিপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রভাত বিশ্বাস। তিনি বলেন, সোনা ঘোষ আমার ওয়ার্ডের তৃণমূলের কনভেনার। তবে অনুপ দেবনাথের পরিবার যে অভিযোগ তুলছে তা পুরোটা সত্য নয়। আমি যেটুকু খবর পেয়েছি পুরো ঘটনার মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা নৃপেন মন্ডল বলেন, শুধু শান্তিপুর নয়, সারা রাজ্যজুড়ে প্রমোটারিরাজ চলছে, এটা নতুন কিছু নয়। অসহায় পরিবারকে ভয় দেখিয়ে প্রমোটারি করতে সুবিধা হবে প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।

