রামপুরহাটে শিক্ষিকাকে অপমান করার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৪ আগস্ট: স্কুলের জায়গায় দোকানঘর নির্মাণের প্রতিবাদে সামিল হওয়ায় শিক্ষিকাকে চূড়ান্ত অপমান করার অভিযোগ উঠল পরিচালন সমিতির মনোনীত সভাপতি তথা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষিকা বিষয়টি নিয়ে লিখিতভাবে পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

প্রসঙ্গত, শতাব্দী প্রাচীন রামপুরহাট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাচীর ভেঙ্গে স্কুলের জায়গায় অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরই প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রাক্তনীদের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা দেবিকা চট্টোপাধ্যায়। তিনি সোস্যাল মিডিয়াতেও স্কুল চত্বরকে বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহারের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। শিক্ষাপ্রেমী মানুষজনদের সাথে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদও করেন। শুধু তিনিই নন ঐতিহ্যপ্রাচীন স্কুলের সভাপতির ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ঝড় ওঠে রামপুরহাট শহর জুড়ে। শিক্ষা-সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান। প্রাক্তনীরা একত্রিত হয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে প্রতিবাদপত্র জমা দেন।

এরপরেই মহকুমা শাসক এবং কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পিছু হঠে স্কুল পরিচালন সমিতি। দোকানঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে পুরনো জায়গায় প্রাচীর তুলতে বাধ্য হয়। তবে এখনও ভিতরের নবনির্মিত প্রাচীর ভাঙ্গা হয়নি। এরই প্রতিবাদে স্কুলে কর্মরত শিক্ষিকা প্রথম থেকেই প্রতিবাদ করেছিলেন। তারই খেসারতে হিসাবে স্কুল সভাপতি তাঁকে আপত্তিজনক কথা বলেন সহকর্মীদের সামনে। তাও আবার খোদ প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে। এহেন আচরনের প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন ওই শিক্ষিকা।
শিক্ষিকার বলেন, “স্কুলের জায়গা বাণিজ্যিক হিসাবে ব্যবহারের প্রতিবাদে আমি ফেসবুকে সরব হয়েছিলাম। এরপরেই স্কুলে পেয়ে সভাপতি আমাকে কৈফিয়ত চান কেন স্কুলের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছিলাম। এরপরেই অপমানজনক কথা বলেন। যা আমি মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছি। আমার প্রশ্ন, একজন মনোনীত সভাপতি কি করে একজন শিক্ষিকার ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করতে পারেন? আমি এর প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি”।

স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা আরশাদ হোসেন জানিয়েছেন, “শিক্ষিকা নিজেই নিয়ম মানেন না। সময়ে স্কুল আসেন না। নিজে বাঁচার তাগিদে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আমি জানতামই না তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন”।

প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নূরজ্জামানের বলেন, “বিষয়টা অত গভীর নয়। সবাইকে এক হয়েই স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে”। তবে ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে ডিওয়াইএফআই। ডিওয়াইএফআই নেতা অমিতাভ সিং জানিয়েছেন, “আমরা পোস্টারিং করেছি। মহকুমা শাসকের কাছে ডেপুটেশন দিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাবো। সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তুলব”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *