সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৭ সেপ্টেম্বর: বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ার আগেই বাঁকুড়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। একের পর এক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া পঞ্চায়েত সদস্যরা ফের বিজেপিতে ফিরে যাওয়ার ঘটনায় বেকায়দায় শাসক দল। জেলার ওন্দা ব্লকের চিঙ্গানী ও সোনামুখী ব্লকের মানিকবাজারের পর ফের ওন্দার চিঙ্গানী গ্রাম পঞ্চায়েতে একই ঘটনা ঘটল।এই পঞ্চায়েতের দলবদলু এক সদস্য ফিরে এলেন নিজের দল বিজেপিতে। ওই পঞ্চায়েত সদস্য তারাপদ পালের গায়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করে ফের নিজেদের ঘরে তুলে নিল বিজেপি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় যে তিন জন পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সেই তিন জনই ফিরে গেলেন বিজেপিতে। এনিয়ে কার্যত মুখ পুড়ল তৃণমূলের। জেলা রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ভোটের মুখে পঞ্চায়েতগুলি নিজেদের দখলে আনতে বিজেপি সদস্যদের নিজ দলে যোগদান করাতে উদ্যোগ নেয় তৃণমূল। বিজেপির তিন পঞ্চায়েত সদস্য দলবদল করে তৃণমূলে গিয়েও ছিলেন। তারা ফিরে আসাতে জোর ধাক্কা খেল শাসক দল। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের গোড়াতে বিজেপি ছেড়ে তিন জন নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। কিন্তু তাদের কাউকেই ধরে রাখতে পারল না তৃণমূল। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সোনামুখী ব্লকের মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা শ্যামলী লোহার। শাসক দল ঘটা করে তাকে বরণ করেন। কিন্তু গত ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি ফের বিজেপিতে ফিরে আসেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর তৃণমূলে যোগদানের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ফের বিজেপিতে ফিরে আসেন চিঙ্গানী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য গণেশ মল্ল। এবার দলে ফিরলেন চিঙ্গানী গ্রাম পঞ্চায়েতের অপর এক দলবদলু সদস্য তারাপদ পাল। গত ১১ সেপ্টেম্বর তৃণমূলে যোগ দেন তারাপদ পাল। গত মঙ্গলবার ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখার হাত ধরে ফের বিজেপিতে যোগ দেন। গায়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে তাকে শুদ্ধ করে ফের দলে ফেরান বিধায়ক। অন্যদের মত পঞ্চায়েত সদস্য তারাপদবাবুর দাবি, তাকে ভুল বুঝিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। তারাপদবাবুর আরও অভিযোগ, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে তাকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ভুল করে ও ভয়ে চলে গিয়েছিলাম। এখন ভুল বুঝে ফেরত এসেছি।
বিজেপি বিধায়কের দাবি, ভুল বুঝিয়ে ও ছেলেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই সদস্যকে তৃণমূলে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় থেকে তাকে নরমে গরমে ঝাড়ফুঁক করতে থাকে তৃণমূল। তিনি আরও বলেন যে, ওরা প্রকৃতপক্ষে বিজেপি করে। ভয় ও লোভ দেখিয়ে ওদের নিয়ে যায়। নিরীহ মানুষ ওরা। এখন তো ঝাড়ফুঁকের যুগ, তাই ব্রাহ্মণের ছেলে হয়ে একেবারে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ঘরে ফেরালাম।
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, দলবদলু ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে প্রবল চাপ দিয়ে বিজেপিতে ফের যোগদানে বাধ্য করা হয়েছে।

