আমাদের ভারত, ১৪ ডিসেম্বর: মেসির কলকাতা সফর ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা কুড়াচ্ছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দর্শকদের ভাঙ্গচুরের ঘটনায় পুলিশের তদন্ত চলছে। একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতদ্রু দত্তকে। আদালত তাকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। শনিবার এই ঘটনায় রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার পুলিশের ব্যর্থতাকে দায়ী করে সরব হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
কলকাতায় বিশৃঙ্খলা হলেও হায়দ্রাবাদের মেসিকে নিয়ে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। এ নিয়ে রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অনেক শহর কলকাতার থেকে এগিয়ে। এখানে জলের বোতলের দাম দেড়শো থেকে তিনশো টাকা নেওয়া হয়েছে। সব জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে ব্যবসা করার জন্যেই মেসিকে নিয়ে এসেছিল।
কটাক্ষের ভাষায় তিনি বলেন, মেসির সঙ্গে ছবি তুলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির লোক, অথচ সাধারণ মানুষ, যারা টাকা দিয়ে টিকিট কেটে এসেছিলেন তারা দেখতে পেলেন না।
অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আসলে যতক্ষণ না মালকিন বলবে পুলিশ কোনো কাজ করবে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মেসির অনুষ্ঠানকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা হাইজ্যাক করেছেন। তাঁর দাবি যে, আয়োজক ও মেসির আশপাশে থাকা ব্যক্তিরা উভয়ই শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনা। আয়োজকরা নিজেরাই তৃণমূলের লোক ছিল। এখন তৃণমূল দেখানোর চেষ্টা করছে যে, তারা আলাদা, কিন্তু তারা তা নয়। উভয়ই এক। মেসির আশপাশে যারা ছিল, তারা সবাই তৃণমূলের লোক
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল থেকেই মেসির আগমন ঘিরে কলকাতাতে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। হাজার হাজার দর্শক কয়েক হাজার টাকার টিকিট কেটে যুবভারতীতে হাজির হয়েছিলেন মেসিকে এক ঝলক দেখার আশায়, কিন্তু ভি আই পি ব্যক্তি সেলিব্রেটি। তাদের নীরপত্তায় থাকা গার্ড, ভলান্টিয়ারের মঞ্চে অবস্থানের কারণে ফুটবলের এই স্বপ্নের তারকাকে কার্যত এক ঝলক দেখতেই পায়নি গ্যালারিতে বসে থাকা সাধারণ মানুষ। মেসির মাঠে উপস্থিতি ছিল মাত্র কয়েক মিনিট। নির্ধারিত স্টেডিয়াম ল্যাপও সম্পন্ন হয়নি। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে যান ক্ষুব্ধ দর্শকের একটা বড় অংশ। চেয়ার ভেঙ্গে বোতল ছোড়া হয়, ব্যানার ভেঙ্গে ফেলা হয়। রীতিমতো তাণ্ডব চলে যুবভারতীতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় নিরাপত্তা বাহিনী। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই দ্রুত মেসিকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় আগেই।
শনিবার যুবভারতীতে পরিস্থিতিতে এতটাই খারাপ ছিল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মাঝপথ থেকে ফেরত যেতে হয়। এরপর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসির কাছে ক্ষমা চায় এবং গোটা ঘটনার জন্য মিস ম্যানেজমেন্টকেই দায়ী করেন।

