আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২০ নভেম্বর: ফের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত সিউড়ি ২ নম্বর ব্লক। এবার সাংসদ শতাব্দী রায়ের সামনে সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের কোমা অঞ্চলের সভাপতি এবং তাঁর সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগ উঠল। সাংসদের নিরাপত্তারক্ষী অঞ্চল সভাপতিকে উদ্ধার করে গাড়িতে চাপিয়ে এলাকা ছাড়েন। যদিও সাংসদ এবং আক্রান্ত অঞ্চল সভাপতির অভিযোগ বিজেপি-সিপিএমের লোকজন তাদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের গাংটে গ্রামে।
ওই গ্রামে বৃহস্পতিবার এস আই আর ক্যাম্প পরিদর্শনে যান সাংসদ শতাব্দী রায়। সেখানে সাংসদ বক্তব্য রাখার সময় কিছু লোক তাঁকে বাধার সৃষ্টি করেন। এনিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। উত্তেজনা বাড়ায় শতাব্দী রায় এলাকা ছেড়ে নিজের গাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে হাঁটতে শুরু করেন অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ কোমা অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি। সেই সময় তৃণমূলের কাজল সেখ ঘনিষ্ঠ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম গোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চল সভাপতি এবং তার কর্মীদের কিল- ঘুসি মারে। সাংসদের গাড়ির সামনে এক মহিলা শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বলরাম বাগদিকে মারধর শুরু করলে সাংসদের নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে এলাকা ছাড়েন।” ঘটনায় দু’জন জখম হন। তাদের সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বলরাম বাগদি বলেন, “যারা মারধর করেছে তারা সিপিএম এবং বিজেপি করে। কিন্তু এখন তারা ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের মারধর করছে। এরা সকলে ব্লক সভাপতির আশ্রিত মানুষ। যে ছেলেটি বার বার সাংসদের বক্তব্য থামিয়ে দিচ্ছিল তিনি সিপিএমের বিএলএ ২। যারা মারধর করেছে তাদের মধ্যে একজন বিজেপির বিএলএ ২। কারণ বছর ছয়েক থেকে ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের সঙ্গে আমাদের মনমালিন্য চলছে। সেই সুযোগকে কাজ লাগিয়ে তৃণমূলের জামা পরে সাংসদের সামনে আমাদের মারধর করা হল।”

সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, “যে আমার বক্তব্য থামাচ্ছিল সে সিপিএমের বিএলএ ২। যে মহিলা আমার গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েছিল সে বিজেপির লোক। বিজেপির সমস্ত মিটিংয়ে তাকে দেখা গিয়েছে। ধ্রুব সাহার সঙ্গে দেখা গিয়েছে। আরেকজন ছিল বিজেপির বিএলএ ২। এরা কেউ আমদের লোক নয়। এরা যদি অশান্তি করে তাহলে ঝামেলা তো হবেই। এটা হওয়ার ছিল। এদের উস্কানি দিলে এরকম ঘটনা ঘটবে। আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো আছেই।”
নুরুল ইসলাম গোষ্ঠীর তৃণমূল নেতা, অবিনাশপুর অঞ্চল সভাপতি রাজু মুখোপাধ্যায় বলেন, “এসব জনরোষ। মানুষের মধ্যে বলরামের উপর আক্রোশ রয়েছে। তার চলার পথে নিশ্চয়ই কোন ভুল রয়েছে। যারা ঝামেলা করেছে সকলেই তৃণমূলের লোকজন। এনিয়ে আমরা উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবো।”
সাংসদ শতাব্দী বিজেপি ভূত দেখছেন। এই লড়াই কাটমানি পাওয়া, না পাওয়ার লড়াই। যত দিন যাবে, সাংসদ দিদিমণি এরকম ভূত তত দেখবেন। এরকম আত্মঘাতী গোল হতেই থাকবে। তবে আমরা জার্সি পরে মাঠে নেমেছি। আমরা গোল দিতে প্রস্তুত। কত গোল খাবেন সেটা ঠিক করুন।”

