পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২ সেপ্টেম্বর: কাটমানির অডিও ভাইরাল নিয়ে এবার বালুরঘাটে মুখ খুললেন তৃণমূল কাউন্সিলর নীতা নন্দী। অডিওতে পাওয়া ভয়েসের সাথে তার কন্ঠস্বরের মিল পাওয়া গেলে কাউন্সিলরের পদ থেকেও পদত্যাগ করবার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। শনিবার বালুরঘাট শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর নীতা নন্দী। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার তদন্তের জন্য বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর। যা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে পিছপা হয়নি বিজেপি। তাদের প্রশ্ন, ঘটনার নয়দিন পর কেন ওই কাউন্সিলরকে বিবৃতি দিতে হল? যা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে গোটা বালুরঘাট শহরজুড়ে।
জানাযায়, বালুরঘাট শহরজুড়ে পুরসভার তরফে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যে তালিকা থেকে বাদ যায়নি শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডও। প্রায় ১ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই ওয়ার্ডে একটি কাজ করেন শহরের এক ঠিকাদার। যেখান থেকে প্রায় কুড়ি শতাংশ টাকা কাটমানি হিসাবে দাবি করা হয়েছে ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে। ২৪ আগস্ট এমনই একটি অডিও সামনে আনে বিজেপি নেতারা। যা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
বিজেপির অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর নীতা নন্দী প্রকাশ্যে ঠিকাদারের কাছ থেকে কুড়ি শতাংশ কাটমানি চাইছেন। দল চালাবার জন্য তাদের দিতেই হবে এমনটাও ওই অডিওতে দাবি করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর বলে অভিযোগ বিজেপির। শুধু তাই নয়, ঠিকাদার নিজেকে তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচয় দিলেও কাটমানির দাবি বজায় রাখেন ওই কাউন্সিলর। বিজেপির তরফে প্রকাশিত যে অডিও সামনে আসতেই রীতিমতো হইচই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বালুরঘাট শহরে। তাদের অভিযোগ, কাটমানি তোলার এই ঘটনা তৃণমূলের কাছে নতুন কিছু নয়। এর আগেও শহরের এক কাউন্সিলরের ছেলের কাটমানি চাওয়ার অডিও ভাইরাল হয়েছে। যারপরেই ওই অডিও সামনে আসতেই কাটমানিশ্রী নেত্রী বলে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরকে কটাক্ষ করে তার ছবি দিয়ে একটি অডিও ভাইরাল করেছিল বিজেপি।
যে ঘটনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। তার অভিযোগ, পুরসভাকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব ফন্দি আটছে বিজেপি। এরপর ঘটনার নয়দিন কেটে গেছে। এদিন এই বিষয় নিয়ে বালুরঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর নীতা নন্দী। যদিও সেই অভিযোগে কারো নাম উল্লেখ নেই। যা নিয়েও ওই কাউন্সিলরকে কটাক্ষ করতে পিছপা হয়নি বিজেপি নেতা সুমন বর্মন। তার অভিযোগ, প্রাইমারি স্কুলে পড়া ছাত্র ছাত্রীর মতো একটি অভিযোগ শিক্ষককে দিয়েছেন ওই তৃণমূল কাউন্সিলর। যে অভিযোগ নিয়েও হাস্যকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
সুমন বর্মন বলেন, ভাইরাল হওয়া ওই অডিওর তদন্তের জন্য তারা এসডিওকে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কোনো সদুত্তর মেলেনি। অবিলম্বে ওই ঠিকাদার এবং তার সাথে কাউন্সিলর সহ আরো যারা জড়িত রয়েছে তাদের গ্রেফতার না করা হলে আন্দোলনে নামবেন তারা।
তৃণমূল কাউন্সিলর নীতা নন্দী বলেন, ভাইরাল হওয়া ওই অডিওর সাথে তার এবং তার স্বামীর কোনো সংযোগ নেই। যদি কেউ তা প্রমাণ করতে পারেন তাহলে কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন তিনি।