আমাদের ভারত, ২৯ মার্চ: নিয়োগ দুর্নীতির ও কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্পের টাকা লুটের অভিযোগে আজ শ্যামবাজারে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিল বিজেপি। সেখানে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার সকলেই সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডল ইতিমধ্যেই তিহারে গেছেন এরপর বাকিরাও যাবেন। তার কথায় তিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের একটা ইউনিট এবার খুলতে হবে।
অনুব্রত মন্ডল ইতিমধ্যেই তিহারে গেছেন। যা পরিস্থিতি আগামী ৪ মাস তাকে তিহারেই থাকতে হবে। কিন্তু এর পরেও প্রায় প্রতিদিনই দুর্নীতিতে দলে একের পর এক নেতা মন্ত্রীদের নাম জড়াচ্ছে।আর সেই ঘটনাকেই কটাক্ষ করে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস আগামীতে তিহার কংগ্রেসে পরিণত হবে।” তৃণমূল নেতাদের তাঁর পরামর্শ তিহারেও আপনারা একটি ইউনিট খুলুন।

আজ বক্তব্যের শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্ণা মঞ্চ নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ তৈরি করেছে রাজ্য পূর্ত দপ্তর, অথচ পিছনে তৃণমূলের প্রতীক জ্বলজ্বল করছে, ওটা দলের নাকি সরকারের বোঝা যাচ্ছে না। পুরো মাখামাখি হয়ে ঘেঁটে ঘ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ভাইপোর মঞ্চ কারা করেছে আমরা জানি না। শুধু এটুকু বুঝতে পারছি “নন্দলাল চুরির টাকায় মঞ্চ করে সাধু সাজার ভার”।
সুকান্তবাবু বলেন, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ কোনো নতুন বিষয় নয়। তৃণমূল আসার পর মানুষ ভেবেছিল হয়তো নতুন কিছু হবে। কিন্তু দেখলাম সেই পুরনো মদ নতুন বোতলে। শুধু স্টিকার বদলে গিয়েছে। কাস্তে হাতুড়ির জায়গায় জোড়া ফুল হয়ে গিয়েছে কিন্তু সেই পুরনো মদ চলে এসেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা হচ্ছে রাজ্যের সাথে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্র নাকি টাকা দিচ্ছে না, কেন টাকা দেবে? আপনার নেতার বান্ধবীর বাড়িতে ৫০ কোটি করে জমাবেন, সেই চুরির জন্য টাকা দেওয়া হবে? অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তিনি এসব জানতেনই না অথচ তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মহাসচিব পদ দিয়েছিলেন। এরপরই তার কটাক্ষ সাদা শাড়ি আর হাওয়াই চটি পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষকে বোকা বানিয়েছে।

আগের লোকসভা নির্বাচন ও ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে পেগাসাসকে বড় ইস্যু করে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী তার ফোনের ক্যামেরার সামনে ব্রাউন টেপ চিটিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, তার সব খবর মোদী সরকার গোপনে হাতিয়ে নিচ্ছে। আজ সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেও খোঁচা দেন সুকান্ত মজুমদার। রাষ্ট্রপতি সফর কালে রাজভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রণে গিয়ে তিনি যা দেখেছেন সেই কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি খাওয়ার থেকে নজর রেখেছিলাম টেবিলে মোবাইলের দিকে। দেখছিলাম ব্রাউনটেপ আছে কি নেই, দেখলাম ব্রাউন টেপ নেই। যেমনি ভোট পার হয়ে যাবার পর পায়ের প্লাস্টার খুলে গিয়েছিল ব্রাউন টেপও খুলে গিয়েছে মোবাইল থেকে।” তার দাবি, প্রতি ক্ষেত্রেই মু্খ্যমন্ত্রী মিথ্যা বলে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে চলেছেন।
গত সুকান্ত মজুমদার সহ বাংলার বিজেপি সাংসদরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। বিরোধী দল নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে অমিত শাহে। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন,”সব কথা বলা যাবে না, শুধু এটুকু বলতে পারি কোনো চোর বাইরে থাকবে না। আর টাকার হিসেব না দিলে কোনো কেন্দ্রীয় অর্থ আর দেওয়া হবে না।”

