আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৩ নভেম্বর : পুলিশ আর গুন্ডা সরে গেলে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস খোলার লোক থাকবে না। ভগবানপুরে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে মৃত বিজেপি কর্মী চন্দন মাইতির স্মরণসভা থেকে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুরদার।
আজ শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের মহম্মদপুরের দেঁদাঁড়ি গ্রামের নিহত বিজেপি কর্মী চন্দন মাইতির স্মরণসভার আয়োজন করে বিজেপি নেতৃত্ব। ওই স্মরণ সভায় উপস্থিত হন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি নবারুণ নায়ক সহ বিজেপির জেলা ও স্থানীয় নেতৃত্ব। স্মরণসভাতে উপস্থিত হন বিজেপি কর্মী লক্ষ্মীরানী মাইতি এবং তার ছোট ছেলেও। স্মরণসভায় ভগবানপুরের মহম্মদপুরে বিজেপির শক্তি কেন্দ্রের প্রমূখ নিহত চন্দন মাইতির স্ত্রী লক্ষ্মীরানী মাইতির হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
নিহত বিজেপি কর্মী চন্দন মাইতির স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে এক হাত নেন। তিনি বলেন, নিচুতলার পুলিশ কর্মীরা যথেষ্ট ভালো। তারা নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু উঁচুতলার পুলিশ কর্মীরা দিদিমণি ও ভাইপোকে খুশি করতে অনেক দুর্নীতিমূলক কাজকর্ম করে বেড়ান। সব সময় সবার ভালো যায় না। তখন কিন্তু আমরাও কাউকে ছেড়ে কথা বলবো না। যদি নিরপেক্ষ হন তাহলে আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবো। পুলিশ প্রশাসনের মেরুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে রাজ্যে ভেঙে পড়েছে। তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেন, কিছুদিন পর পঞ্চায়েত ভোট ও পৌরসভা ভোট আসতে দিন নিজেদের মধ্যে কাটমানি নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হবে।
সুকান্তবাবু বলেন, গণতন্ত্রে একটি দল জিতবে, একটি দল হারবে, বিরোধীদল তার ভূমিকা পালন করবে এটা তো স্বাভাবিক। যদি মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের কাছ থেকে ভারতমাতা জয় বলার অধিকার কেড়ে নেবে বলে, হবে বলতে চাই শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা রুখে দাঁড়াবো। ২ মে ভোটের ফল গণনার পরে সারা রাজ্যে প্রচুর গণ্ডগোল হচ্ছে। কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না, এই চোখের জলের অভিশাপ তৃণমূল কংগ্রেসকে একদিন ডুবিয়ে মারবে। সেদিন বেশী দূরে নেই। পুলিশ আর গুন্ডা সরে গেলে তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস খোলার লোক থাকবে না।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বলেন, পুলিশ যদি ছেড়েও দেয় সিবিআই দিয়ে তদন্ত করে এদের জেলে পাঠানোর দায়িত্ব আমাদের। নন্দীগ্রামে এখনো পর্যন্ত ১১ জন গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে। খেলা সবে শুরু হয়েছে, খেলা অনেক বাকি রয়েছে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চন্দন মাইতি খুনের প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুরদার বলেন, নিহত বিজেপি কর্মী চন্দন মাইতি খুনের ঘটনায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে গাঁজা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। গাঁজা ব্যবসা থেকেও পুলিশ লাভবান হয় ও টাকা পায়। সেই জন্য আমরা সিবিআই ও মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি লিখবো। এই মামলা যেন সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ভগবানপুরে আসার সময় রাস্তায় জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় দলীয় কর্মী সমর্থকরা তাঁকে সম্বর্ধনা জানান।