আমাদের ভারত, ১৬ জুন: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসন্তী বিধানসভার ঝড়খালি এলাকার জ্যোতিষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী অপর্ণা হালদারের বাড়ি ঘর শাসক দল তৃণমূলের কর্মীরা ভাঙ্গচুর করে লুটপাট চালায় বৃহস্পতিবার রাতে। এমনকি তাদের প্রাণে মেরে দেওয়ারও হুমকি দেয়। ঘটনা জানার পরেই শুক্রবার অপর্না দেবীর বাড়িতে ছুটে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে গিয়ে রাজ্যের শাসক দল ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি।
তাঁর কথায়, তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে এই রকম ভিখারীর দশা হয়েছে জানতাম না। আগে বললে রাজ্য জুড়ে এক টাকা করে চাঁদা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতাম। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না করায় সরব হন ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন কমিশনের কাছে।
বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরই অপর্না হালদারের বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অপর্ণা হালদারের স্বামী বিজেপির বুথ সভাপতি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলায় হঠাৎ বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঘরে ঢুকে লুটপাট ও ভাঙ্গচুর চালায় দুষ্কৃতিরা। তৃণমূল নেতা জগদীশ মন্ডল ও আখতার মোল্লার নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন তৃণমূল কর্মী বাড়িতে এসে দাপাদাপি করে বলে অভিযোগ। আলমারিতে থাকা সোনার গয়না, টাকা- পয়সা, দামি জিনিস সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
আজ আক্রান্তদের সাথে দেখা করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এরা অমানুষের মতো কাজ করছে। টিভি ভেঙ্গেছে, ফ্রিজ ভেঙ্গেছে, থাকা খাওয়ার সমস্ত জায়গায় ভাঙ্গচুর চালিয়েছে, বাসনপত্র ভেঙ্গে ফেলেছে। আলমারি ভেঙ্গে সোনা- গয়না, টাকা- পয়সা যা ছিল সেগুলি সব লুট করেছে। এরকম ভিখারির মতো অবস্থা তো বলতে পারেন মমতা ব্যানার্জি, আমরা চাঁদা তুলে কিছু টাকা মমতা ব্যানার্জিকে পাঠিয়ে দেবো। অভিষেক ব্যানার্জিকেও কিছু টাকা দিয়ে দিতাম। সেলাই মেশিন তুলে নিয়ে গেছে গরিব মানুষের। এরা কাপড়ের ব্যবসা করে। কাপড়ের দুটো বড় বড় মুঠ ছিল সেগুলো নিয়ে গেছে। এরকম ভিখারির জাত যখন বললেই পারে, আমরা গোটা রাজ্য থেকে এক টাকা করে চাঁদা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দিয়ে দেব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাপড় নেই এখান থেকে কাপড় নিয়ে গেছে।”
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবো জগদীশ মন্ডল ও আখতার মোল্লার বিরুদ্ধে।” তিনি জানান, তার দলের প্রার্থীকে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। এমনকি খুনেরও হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, আদালত বলার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করবে না কমিশন। তাহলে এই লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের নির্বাচন কমিশনকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিনি দাবি তোলেন, এই ভোটে যাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে যে দলেরই হোক, তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
বৃহস্পতিবার আক্রমণকারীরা বিজেপির পতাকা লাগালে খুনের হুমকি দিয়েছিল। এর পাল্টা দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমি এখুনি বিজেপির পতাকা লাগাবো এলাকায় দেখি কার কত দম আমার উপর হামলা করে। এরপর তিনি কথা মতো কাজও করেন, নিজে হাতে দলের পতাকা লাগিয়ে দেন এলাকায়।