আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৪ ডিসেম্বর: ব্যারাকপুরে ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে পর থেকেই বিজেপির বহু নেতা ও কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। সদ্য ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর হাত ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অনিল রজক। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই কর্মী অপর তৃণমূল কর্মী সন্তোষ জয়সওয়াল ও তার দলবলের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। আক্রান্ত অনিল রজক গুরুতর আহত অবস্থায় স্টল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
প্রসঙ্গত, অনিল রজক মনীষ শুক্লা ও বিশাল যাদবের অনুগামী বলে পরিচিত। এই দুজনের হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন আক্রান্ত এই তৃণমূল কর্মী। প্রথমে ২০০৯ সাল থেকে তৃণমূল দলেই ছিলেন অনিল রজক। তারপর ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দান করেন তিনি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে পর আবার সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয় অনিল রজক। আর তারপর থেকেই তার ওপর শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর কর্মীদের অত্যাচার, এমনই অভিযোগ অনিলবাবুর পরিবারের। তার দাদার অভিযোগ, রবিবার রাতে বন্ধুর দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্যারাকপুরের শান্তিবাজারে সন্তোষ জয়সওয়াল তার দলবল নিয়ে চরাও হয় তৃণমূল কর্মী অনিলের ওপর। ইট, রড ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাকে এলাকাবাসীরা রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনটে হাসপাতাল ঘুরে বর্তমানে স্টল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
পরিবারের পক্ষ থেকে টিটাগড় থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে জানান আক্রান্তের দাদা। এদিন তার দাদা সুনীল রজক বলেন, “আমার ভাই কোনও দিন কারোর সাথে গণ্ডগোল করে না, কোনও তোলা চাওয়ার ঘটনায় জড়িত নেই। এই আক্রমন টা তৃণমূলের লোকেরাই করেছে। এর আগেও একাধিক বার আমার ভাইয়ের উপর আক্রমণ হয়েছে।”
অপর দিকে বিজেপি এই ঘটনাকে নব্য তৃণমূল বনাম পুরানো তৃণমূলের লড়াই বলে আক্ষা দিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল কংগ্রেসের দমদম- ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান, নির্মল ঘোষ বলেন, “দলের স্পষ্ট নিয়ম আইন আইনের পথে চলবে। দলের কেউ আইন হাতে তুলে নিলে তার বিচার আইন করবে। গোটা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন দেখছে। দলের মধ্যে কোনও বিতর্ক হলে তা দেখা উচ্চ নেতৃত্বের কাজ আর সেটা তারা করবেন। দল করছে বলে কেউ আইন নিজের হাতে তুলতে পারে না। রক্তের রাজনীতি আমরা করি না। অপরাধ করলে তার শাস্তি হবেই।”
তবে এই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে টিটাগর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর অনুযায়ী ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত রাজা নামে এক দুষ্কৃতিকে গ্রেপ্তার করেছে টিটাগড় থানার পুলিশ।