স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৩ জুন: তোলা আদায়ের প্রতিবাদ করায় বঁটি দিয়ে কোপানো হল এক টোটো চালককে। এই ঘটনা রানাঘাট কুপার্স মাছ বাজারের। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী বলে এলাকার মানুষের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে যখন বাজারে কেনাকাটা চলছে তখন দশটা নাগাদ পাশের ফাঁকা দোকান থেকে একটা ধারালো বঁটি নিয়ে বাপ্পা রায় পূর্বরাগবশতঃ প্রদীপ বিশ্বাসকে মাথায় কোপাতে গেলে প্রদীপ বাম হাত দিয়ে ঠেকাতে যায়। এর ফলে বাম হাতের কনুইয়ের উপর মারাত্মকভাবে আঘাত লাগে প্রদীপ বিশ্বাসের। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রদীপ। সেই সুযোগে বাপ্পা আর একটা কোপ দেয় যেটা প্রদীপের মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে প্রদীপ অজ্ঞান হয়ে যায়। আশেপাশের লোকজনের চিৎকারে বাপ্পা ওখান থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা প্রদীপকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে তার হাতে এবং মাথায় মিলিয়ে ৭২টা সেলাই করা হয়। আহত প্রদীপ বিশ্বাস এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত।
আহতের দাবি, বাপ্পা ভয় দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলে। আমি প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই আমাকে মার খেতে হল।
প্রসঙ্গত লকডাউনের কারণে টোটো বন্ধ ছিল। তাই দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে ছিল প্রদীপ। সম্প্রতি সে মাছ বাজারে পাপাই ঢালীর দোকানে হেল্পারের কাজ করছিল। সেদিন এই মাছ বাজারেই বাপ্পা রায় তাকে দেখে ফেলে। আর তখনই পূর্বরাগবশতঃ তার ওপর হামলা করে। এরপর প্রদীপ মারা গেছে ভেবে বাপ্পা ওখান থেকে পালিয়ে যায় এবং থানায় আত্মসমর্পণ করে।
কুপার্সের চেয়ারম্যান শিবু বাইন জানান, এদের দুটোর কেউই আমার লোক নয়। এরা দুটোই উশৃঙ্খল ছেলে। মিটিং মিছিলে গেছে কোনও একটা ছবি কেউ দেখাতে পারবে? এখনতো ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপের যুগ একটা ছবি কেউ দেখাক আমি মেনে নেব আমাদের লোকের সাথে এরা আছে। এরা দুজনেই বিজেপির লোক ওরা একই সঙ্গে দুজনে ঘুরে বেড়ায়।
রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপির সহ সভাপতি পঙ্কজ ঘোষ জানান, যখন ত্রাণ বন্টন নিয়ে চাল চুরির মতন ঘটনা ঘটে গেছে সেখানে দাঁড়িয়ে সামান্য কোনও বিষয়ে যদি প্রতিবাদ করা হয় সেই প্রতিবাদের মাশুল হিসাবে সরকারের পক্ষ থেকে কাউকে না কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, খুনোখুনি করা হচ্ছে, অথবা গুলি বোমা ছোড়া হচ্ছে। এটা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এই মুহূর্তে তৃণমূলের যে দুষ্কৃতীরা রয়েছে তারা তাদের পায়ের তলার মাটি হারিয়ে ফেলেছে। তৃণমূলের এই সমস্ত নোংরামির জন্য মানুষ আজ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর বিজেপির উত্থান দেখে তারা ভয় পাচ্ছে। যার জন্য বিজেপির যারা একনিষ্ঠ কর্মী যারা বিজেপিকে ভালোবাসে তাদেরকে যদি কোনো কারণে হঠিয়ে দেওয়া যায় তাহলে তৃণমূল আগামীতে আবার বিজেপিতে মাথা গলিয়ে নেতা হতে পারবে। এটা একটা পরিকল্পিত ছক।