করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ছোট বোনের আবদার মেটাতে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিল দাদা

আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগনা, ২১ অক্টোবর:
করোনার এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে মন ভালো ছিল না উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগর মানিকতলার কিশোর সুমিত বাড়ালেরও, কারণ করোনার কারণে এবছর আর বোনকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরোনো হবে না। তাই বোনের আব্দার মেটাতে বাড়িতেই তৈরি করে ফেলেছে এক ফুট উচ্চতার মা দুর্গা।

মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই বছর ১৫ এর সুমিত বড়াল হাতে তুলে নিয়েছিল রং তুলি। বাবা মায়ের হাত ধরেই একটা সময় মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দর্শন করত। গত দুবছর ধরে বছর পাঁচেকের বোনকে সাথে নিয়েই পুজোর কটা দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঠাকুর দেখার নেশা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই করোনা আবহের কারণেই সব যেন আজ ফিকে হয়ে উঠেছে। সুমিতের চোখে বিগত বছরগুলিতে ঠাকুর দেখতে যাওয়া এবং পুজোর ক’টাদিনের আনন্দের সব স্মৃতি যেন অতীত হয়ে চোখের সামনে ভাসছিল। মন ভালো ছিল না সুমিতের বোন শ্রেয়শীরও। ঠাকুর দেখতে যেতে পারবেন না বলে মন ভার রয়েছে ষাটোর্ধ্ব ঠুকরদা ও ঠাকুরমার। কিন্ত মন খারাপের সব অন্ধকার যেন মুছে গেল সুমিতের তুলির টানে। মাত্র ১৫ দিনের চেষ্টায় তৈরি হল এক ফুট উচ্চতার মা দুর্গার প্রতিমা।

দশম শ্রেণির পড়ুয়া সুমিত জানিয়েছেন প্রতিমা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠের কাঠামো, বিচুলি, মাটি, রং, তুলি। কুমোরটুলি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মা দুর্গার শাড়ি ও মায়ের দশ হাতের অস্ত্র। কিশোর প্রতিমা শিল্পী সুমিত আমাদের জানিয়েছে, বোনের আব্দার এবং বয়স্ক দাদু ঠাকুরমার কথা ভেবেই এই ঠাকুর তৈরি করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবছর বাইরে কোথাও ঠাকুর দেখতে যাওয়া হবে না, তাই পরিবারের কথা ভেবেই এই ঠাকুর তৈরি করা হয়েছে।

সুমিতের তৈরি মা দুর্গার প্রতিমাতেই এবছর পুজো হবে বাড়াল বাড়িতে। সুমিতের এহেন উদ্যোগে খুশি তাঁর পরিবার। সুমিত এর আগেও মজার ছলে বিগত বছরগুলিতে লক্ষ্মী ঠাকুর, সরস্বতী ঠাকুর তৈরি করেছিল, তবে এই প্রথম দুর্গা ঠাকুর তৈরি করলো। বোনের মুখে হাসি দেখে খুশি সুমিত নিজেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *