আমাদের ভারত, ১৬ আগস্ট: রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রীর চা-চক্রে উপস্থিত না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। একইসঙ্গে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ রাজ্য ভবনের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। এপ্রসঙ্গে তার হুঁশিয়ারি এই কাজ যেই করুক না কেন তার শাস্তি হবে। আর রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে নজিরবিহীন ভাবে রাজ্যপালকে আঙ্কেলজি বলে সম্বোধন করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
রাজ্যপালের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ তৃণমূল শিবির। তাই রবিবার রাজ্যপালের সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই রাজভবনের ওপর নজরদারির অভিযোগ নিয়ে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে নিশানা দেগেছেন তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। টুইট করে তিনি লিখেছেন,”আঙ্কেলজি এখন বলছেন রাজভবন ও তার ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। ওই জিনিসটা আপনার গুজরাটের বস অন্য যে কেউয়ের থেকে ভালো জানেন। এক্ষেত্রে যে কেউ ওর কাছে নবীস। প্রসঙ্গত এভাবেই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে আঙ্কেলজি বলাটা নজিরবিহীন ঘটনা।
Uncleji now claims he & WB Raj Bhavan premises under surveillance
Believe me, that’s something your bosses from Gujarat do better than anyone else – any of us would be novices at it 🙂— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) August 16, 2020
রবিবার রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, রাজভবনের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। তার কথায় রাজভবনের কোন কর্মচারী রাজ্যপালের কথা শুনবেন না, এই আচরণ কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। রাজভবনের গোপন তথ্য কি করে রাজ্য প্রশাসনের একেবারে সর্বোচ্চ স্তরে চলে গেল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। তিনি জানিয়েছেন যেই এই কাজ করে থাকুক না কেন সে শাস্তি পাবে। তিনি বলেছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করেই রাজ্যপালের কটাক্ষ করে বলেছেন, “নবান্নের কোন গোপন তথ্য এভাবে এলে আমি সতর্ক করতাম”।
একই সঙ্গে স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে চা চক্রে মমতার না যাওয়ার নিয়েও সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “করোনা প্রটোকল মেনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু উনি অত্যন্ত খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। এই ঘটনা আগে কোথাও হয়নি। আমি বাকরুদ্ধ। উনি যখন এসেছিলেন তখন কাজে ব্যস্ত ছিলাম।”
অন্যদিকে ১৫ আগস্ট আচমকাই সারপ্রাইজ ভিজিট করেন রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী। বেশ খানিকটা সময় কাটান সেখানে। কিন্তু চা-চক্রে না যাওয়াতে অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল।
এর পাল্টা দিতে গিয়ে, মহুয়া মিত্র টুইটারে লিখেছেন, করোনা আবহের মধ্যে রাজ্যপালের চা চক্রে যারা আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তারা ভাগ্যবান। করোনার মধ্যে এভাবে চা-চক্রের লোক জোগাড় করা মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে খুব একটা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় না।”
Lucky List of over 96 people who get invited to HRH’s tea parties at WB Raj Bhavan in midst of Covid 19 (with extras for staff, security catering etc) #WhoLetTheTruthOut https://t.co/1kyEy4xbMC pic.twitter.com/kYivtbzTjo
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) August 16, 2020
এদিকে মমতার রাজভবনে সারপ্রাইজ ভিজিটের সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর মনে হলো আর উনি দুপুরে আড্ডা মারতে চলে গেলেন। স্বাধীনতা দিবস তাঝর কাছে আড্ডার মারার দিন বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনাহুত হয়ে চলে গেলেন। উনি প্রমাণ করলেন এরাজ্যে মুখ্য সচিব স্বরাষ্ট্র সচিব বলে কোন পদ নেই। এরা মুখ্যমন্ত্রীর পেছনে ভেক ধরা পার্টি। এদের কোনো রকম প্রশাসনিক মনোভাব নেই, এটা খুব দুর্ভাগ্যের।”