আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১৬ জানুয়ারি: তৃণমূল দল এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। তাই আত্মসম্মানের সঙ্গে এখানে কারো কাজ করা সম্ভব নয়, বললেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার চন্দ্রকোনাতে আয়োজিত বিজেপির এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন,পঁচানব্বই সাল থেকে আমি চন্দ্রকোনায় আসি। এখানকার অলিগলি আমার সব চেনা। ২০০৩ সালে এই সমস্ত এলাকায় ভোকাট্টা ছিল তৃণমূল। কোনও পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারত না। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৫০ হাজার ভোটে হেরেছে এখানে। তারপর দলের পক্ষ থেকে হাল ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১০ সালের পৌর নির্বাচনে ঘাটাল ক্ষীরপাই চন্দ্রকোনা এবং খরার পুরসভায় মোটামুটি ভালো ফল করে তৃণমূল। সেইসময় ঘাটালের সমস্ত তৃণমূল পার্টি অফিসগুলিতে তালা চাবি লাগানো ছিল। তখন শুভেন্দু অধিকারী গিয়ে সেখানকার কর্মীদের বুঝিয়ে সমস্ত তালা-চাবি খোলা হয়েছে। সেই সময় কিন্তু তোলাবাজ ভাইপো এলাকায় পা রাখেনি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এখন আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলা হচ্ছে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি বলে।
কিন্তু তৃণমূল নেত্রী চারবার কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। তার মধ্যে দুবার মন্ত্রী হয়েছিলেন। ৯৮, ৯৯ এবং ২০০৪ সালে বিজেপির সাহায্যে সংসদ হয়েছিলেন। দুবার মন্ত্রী হয়েছেন বিজেপি মন্ত্রিসভায়। সেই নেত্রীর কাছ থেকে আমাকে নীতি শিখতে হবে কেন? একসময় নন্দীগ্রামে কেউ ঢুকতে পারেনি। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সেখানে তৃণমূলের যাওয়ার পথ খুলে দেওয়া হয়। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এই রাজ্যে একটা নতুন শিল্প আসেনি। রাজ্যের দু কোটি বেকারের কি হবে কেউ জানে না। তাই প্রতিবছর যাতে এসএসসি পরীক্ষা হয়, সঠিকভাবে টেট পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ হয় সেজন্য এবং চাষিদের ৫ টাকায় বিক্রি করা আলু ৪০ টাকায় মানুষকে যাতে কিনে খেতে না হয় সে জন্য রাজ্যে বিজেপি
সরকারকে আনতে হবে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এখন ভোটের সময় যমের দুয়ারে সরকার যাচ্ছে। এতদিন তো প্রশাসনিক সভা করে প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজ করে, জেপি নাড্ডাকে নাড্ডা, চাড্ডা, গাড্ডা ইত্যাদি বলে অপমান করে দুই হাজার কোটি টাকা রাজ্যের চলে গেছে। তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, প্রতিটি সভাতে মিথ্যার উপর মিথ্যা বলে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন এ রাজ্যে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যায়, বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, জল পাওয়া যায়, কিন্তু তাহলে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের প্রয়োজন টা কি? শুভেন্দু অধিকারী বলেন বলেন, জেলায় জেলায় সমস্ত গ্রামীণ রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়েছে বালির গাড়ির জন্য। প্রতিটি গাড়িতে বিভিন্ন রকমের কাগজের টোকেন দেওয়া আছে। এই টোকেন দেওয়া হয়েছে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে এবং সেগুলি বিলি করেছে বিনয় মিশ্র। সেই টোকেন দেখালে পুলিশের আর কিছু করার থাকে না। এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন ভারতী ঘোষ। এদিনের সভায় ঘাটাল মহকুমার বেশকিছু তৃণমূল নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন।