আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৬ অক্টোবর: টিটাগর লুমটেক্স জুট মিলে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মিল চত্বরে। পুজো উপলক্ষ্যে তিন দিন মিল বন্ধ থাকার পর শনিবার কাজে যোগ দিতে আসেন শ্রমিকরা। টানা তিন দিনের ছুটি কাটিয়ে শনিবারই কারখানায় কাজ করতে এসেছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু কাজ করবেন কি! ভিতরে ঢুকে চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগাড়। বহু দামী দামী যন্ত্রই নেই। তাহলে কি পুজোর ছুটির তিন দিনের মধ্যে কারখানা থেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ সরিয়ে ফেলেছে মালিক পক্ষ৷ এই অভিযোগেই শনিবার সকাল থেকে ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন শ্রমিকরা, শুরু হয় বিক্ষোভ। মালিক পক্ষ ওই যন্ত্রাংশ অন্যত্র সরিয়ে দিচ্ছে। মিল কর্তৃপক্ষ মিল থেকে প্রচুর যন্ত্রাংশ ও বড় বড় মেশিন সমস্ত তুলে নিয়ে গেছে অন্যত্র এই অভিযোগ এনে শ্রমিকরা মিলের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
শ্রমিকদের আরও দাবি, তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা পড়ছে না ঠিকমত। তাদের আরও দাবি, এই ব্যাপারে মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে এবং কেন মেশিনের যন্ত্রাংশ অন্যত্র সরানো হচ্ছে তা জিজ্ঞেস করা সত্বেও কোনও সদুত্তর পায়নি শ্রমিকরা। এই লুমটেক্স জুটমিলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। যে সমস্ত যন্ত্রাংশ মিল থেকে খোলা হয় সেই মেশিনে কর্মরত শ্রমিকরা কার্যত বেকার হয়ে যাওয়ার অনিশ্চয়তা ভুগতে শুরু করেছেন।
এই সম্পূর্ণ ঘটনার খবর পুলিশের কাছে পৌঁছলে এই বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনস্থলে আসে পুলিশ। তারা বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার জন্য শ্রমিকদের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। এরপর ঘটনাস্থলে আসেন মিল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। তারা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করলে তাদের সাথে শ্রমিকদের বচসা বেধে যায়। এরপর মিল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে শ্রমিকদের জানানো হয় যে তারা মিলের উন্নতির জন্য যে যন্ত্রগুলি ও যন্ত্রাংশগুলি পুরনো হয়ে গেছে সেগুলি বের করে নতুন করে মিলটিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছেন। যাতে মিলের উৎপাদন বাড়ানো যায়। এরপর অবশেষে প্রশাসনের ও মিল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শ্রমিকরা বিক্ষোভ তুলে নেয়। মিলের উৎপাদন পুনরায় চালু হয়।