Tilpara reservoir, Collapses, তিলপাড়া জলাধারের জল বিভাজনকারী দেওয়ালে ধস, যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ, চলছে মেরামতির কাজ

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ১ আগস্ট: সিউড়ি শহর ছাড়িয়ে ১৪ নং জাতীয় সড়কের উপর থাকা তিলপাড়া জলাধারের জল বিভাজনকারী দেওয়ালে দেখা দিয়েছে ধসের চিহ্ন। ফাটল আগেই ধরা পড়েছিল। এবার সেই ফাটল ক্রমশ ধসের চেহারা নিচ্ছে। যা উদ্বেগের সঞ্চার করেছে। ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে যান চলাচল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যান চলাচল।

সিউড়ি থেকে জাতীয় সড়ক ধরে রামপুরহাট যাওয়ার অন্যতম প্রধান সড়কপথ এই জাতীয় সড়ক। এর মাঝেই রয়েছে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর তিলপাড়া জলাধার। সেই জলাধার এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। কিছুদিন যাবত সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই জলাধারের নিম্নধারায় থাকা জল বিভাজনকারী লম্বা কংক্রিটের দেওয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ফাটলের চেহারা বড় আকার নিয়েছিল। শুক্রবার তা পরিদর্শনে এসেছিলেন সেচ দপ্তরের কর্তারা। তারা পরিদর্শন করে ফেরার পরেই, বিকেলের দিকে ফাটলগুলি ধসের চেহারা নিতে শুরু করেছে। যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সেচ দপ্তরের কপালে। বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে সকলের। কারণ এই জলাধারে বিপর্যয় নামলে তা বীরভূমের সদর শহর সিউড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থায় চরমভাবে প্রভাব ফেলবে।

সেচ দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, জলাধারের চার ও পাঁচ নম্বর গেটের মাঝে থাকা ওয়াটার ডিভাইডারে এই ফাটল দেখা গেছে। অতিরিক্ত জলস্ফীতির চাপেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান। তবে এনিয়ে নানা মহলে নানা মত শোনা গেছে। তিলপাড়া জলাধারের বেহাল দশার পেছনে এলাকাবাসীর বড় অংশ যথেচ্ছ বালি উত্তোলনকেও দায়ী করেছে। কারণ এই জলাধারের নিকটবর্তী ময়ূরাক্ষীর নানা ঘাট থেকে বেপরোয়া বালি লুট, নিয়মের তোয়াক্কা না করে নদীগর্ভ খুবলে বালি তোলা স্বাভাবিক চেহারায় পরিণত হয়েছে। শাসক দল, প্রশাসন এবং বালি কারবারীদের গাঁটছড়ায় নদীবুক আজ বিপন্ন। ফলে মানুষের অভিযোগ, এই বেপরোয়া লুটও জলাধারের নির্মাণে আঘাত হেনেছে।

এদিন বিকেলের পর থেকে চরম উদ্বেগের সঞ্চার হয় জলাধারের দেওয়ালে ধসের চিহ্ন নজরে আসতে। প্রশাসনিক তৎপরতা বেড়েছে এই বিপর্যয় সামাল দেওয়ার জন্য। উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের সড়কপথে প্রধান যোগাযোগকারী রাস্তায় থাকা জলাধারের বিপর্যয় প্রসঙ্গে সেচ দপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, “তিলপাড়া ব্যারেজের ডাউন স্ট্রিমের এক্সটেনশন পিলার অ্যান্ড ওয়াটার ডিভাইডারের একাংশে ফাটল দেখা দিয়েছিল আগেই। এবার তাতে ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ভাসমান অবস্থায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যারেজের নিচের অংশ। দীর্ঘদিন ধরে মেরামতির অভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে ব্রিজের নিচের অংশগুলি। জোর কদমে চলছে মেরামতির কাজ। কিন্তু বাধ সাধছে ঝাড়খন্ড ও বীরভূমের অতিরিক্ত বৃষ্টি। ফলে এই অবস্থাতেই জল ছাড়তে হচ্ছে এখান থেকে। স্বাভাবিকভাবেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে মেরামতির কাজ।”

এই ঘটনা যে কোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। ঘটনার জেরে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে যানজট, দুর্ভোগও চরম আকার নিতে চলেছে বলে নিশ্চিত সকলে। এদিন সকালে এলাকা পরিদর্শনে আসা সেচ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সেনগুপ্ত বলেছেন, “পরিদর্শন করেছি। অবস্থা ভাল নয়। দ্রুত মেরামতি করতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *