Tiger, Bandwan, টোপ দিয়েও বাঘিনী ‘জিনাত’কে খুঁজে পাওয়া গেল না বান্দোয়ানে

সাথী দাস, আমাদের ভারত, পুরুলিয়া, ২২ ডিসেম্বর: ওড়িশার সিমলাপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে পালিয়ে যাওয়া তিন বছর বয়সী বাঘিনী জিনাতকে খুঁজে পাওয়া গেল না বান্দোয়ানে। তবে, রবিবার সকালে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ে তার অবস্থান ধরা পড়েছিল। এদিন সকালে ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে পুরুলিয়ায় ঢুকে পড়েছে সে। সকাল দশটা নাগাদ লাস্ট লোকেশন ট্র্যাক করা গিয়েছে। কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে জিনাত। তার খোঁজে হন্যে বনদফতরের কর্মীরা।

গত দু’দিন ধরে খবর ছড়িয়েছিল, একটি নয়, ওড়িশা থেকে বাংলায় ঢুকেছে জোড়া বাঘ-যমুনা ও জিনাত। এদিন স্বস্তি দিয়ে দুই রাজ্যের বনদফতরের ঘোষণা, যমুনা বাংলায় নেই। রেডিও কলারের তথ্য বলছে, আপাতত সেই বাঘিনীর অবস্থান বালাসোরের জঙ্গলে। এ রাজ্যের জঙ্গলে জোড়া বাঘ নয়, একা ঘুরে বেড়াচ্ছে জিনাত। ওড়িশার সীমানা পার করে ঝাড়গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে পায়চারি করছিল তিন বছরের বাঘিনীটি। এই ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, ও ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে রয়েছে ময়ূরঝর্ণা হস্তি প্রকল্প। জিনাতের গলায় থাকা রেডিও কলার বলছে, রাতভর হস্তি প্রকল্পের আওতায় থাকা জঙ্গলেই ঘুরে বেরিয়েছে সে। এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে ১ বনাঞ্চলের ঘাঘরা থেকে রেডিও কলারের সিগনাল পাওয়া গিয়েছিল। সকাল
১০টা নাগাদ সে রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে বলে খবর। মনে করা হচ্ছে, এই জঙ্গলেই ঘাপটি মেরে আছে সে। তবে শ্যাডো জোন হওয়ায় তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন বনদফতরের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।

জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের তাডোবা থেকে যমুনা ও জিনাতকে ওড়িশার সিমলাপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে আনা হয়েছিল। কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর তাদের ‘সফট রিলিজ’ করা হচ্ছিল। অর্থাৎ ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্দরে তাদের গতিবিধি ছিল নিয়ন্ত্রিত। এর মাঝেই রাজ্যের সীমানা টপকে ফেলে তারা। প্রথমে জিনাত ও পরে ‘ঘর’ ছাড়ে যমুনা। প্রায় দেড় মাস হল ঘরছাড়া তারা। দু’জনের গলাতেই বাঁধা রয়েছে রেডিও কলার। অ্যান্টেনা রয়েছে ওড়িশার বনদফতরের কর্মীদের হাতে। জিনাতের পিছন পিছন তাঁরা বাংলায় ঢুকেছেন। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া ঢুকে গিয়েছেন তাঁরা। আজ দুপুরে ঝাড়গ্রাম থেকে বান্দোয়ানে আসে সুন্দরবনের টিমও। তাঁরা মূলত কীভাবে খাঁচা পাতা হবে, কীভাবে টোপ দেওয়া হবে, কীভাবে বাঘটিকে ঘুম পাড়ানো হবে সেদিক নজর রাখছে। বাঘিনীকে ধরার জন্য এদিন ছাগল, মোষ এবং শূকর টোপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত ফাঁদে পা দেয়নি জিনাত। তবে, তৎপর রাজ্য বনাধিকারিকরাও।

বান্দোয়ান কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের অন্তর্গত তিনটি রেঞ্জ বান্দোয়ান ১, বান্দোয়ান ২ এবং যমুনা রেঞ্জের আধিকারিকরা নেমেছেন। এছাড়া বরাবাজার এবং মানবাজার ২ রেঞ্জের অফিসার ও তাঁর দলকেও নামানো হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় টহলদারি ও সচেতনতার প্রচার চলছে। ওই জঙ্গল ও পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় সাধারণের একা যাতায়াত একরকম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শুধু শুধু আতঙ্ক না ছড়ানোর জন্য প্রচার করছে বন দফতর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *