কুলতলির লোকালয়ে বাঘের হানা, আতঙ্কিক এলাকাবাসী

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ৭ ডিসেম্বর: লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির মৈপীঠ কোস্টাল থানার ভুবনেশ্বরী গ্রামে। মঙ্গলবার সকালে এলাকার মানুষ গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান। এতেই আতঙ্ক ছড়ায়।

ঘটনার খবর পেয়ে মৈপীঠ কোস্টাল থানার পুলিশকে খবর দিলে ওসি মধুসূদন পালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যান। গ্রামে বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত হতেই এ বিষয়ে বন দফতরকে খবর দেয় পুলিশ। পরে স্থানীয় নলগড়া বীট অফিস ও আশপাশের রেঞ্জ অফিস থেকে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে বাঘের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় একটি ধান খেতে বাঘের খোঁজ মেলে। এরপরেই ধান ক্ষেতটিকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। বাঘটিকে ধরতে ঘুম পাড়ানি গুলি করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হলেও
বনাধিকারিকরা শেষ পর্যন্ত খাঁচা পেতে বাঘ ধরার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা হয়েছে বাঘটিকে ধরার জন্য। যদিও এখনও পর্যন্ত খাঁচায় ধরা দেয়নি বাঘ। সকাল থেকেই গ্রামে বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে আশপাশের মানুষজন ভিড় জমায় ভুবনেশ্বরী গ্রামে। ঘটনাস্থলে এসে তদারকি শুরু করেন
বনাধিকারিকরাও।

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত দুদিন আগে পার্শ্ববর্তী গুড়গুড়িয়া এলাকায়ও বাঘ ঢুকেছিল লোকালয়ে। কিন্তু সেবার নিজে থেকেই জঙ্গলে ফিরে যায় বাঘ। গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে তদন্তে নেমে বন দফতর জানায় উল্টোদিকের আজমলমারির জঙ্গল থেকে বাঘ গ্রামে ঢুকলেও সে পুনরায় ফিরে গিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ফের গ্রামে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ মেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। তবে এবার বাঘ গ্রামে ঢুকলেও সে জঙ্গলে ফিরতে পারেনি। যদিও বাঘের হানায় এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে যাতে এলাকায় কোনও অঘটন না ঘটে সেই কারণে যথেষ্ট তৎপর বন দফতর ও পুলিশ প্রশাসন।

বন দফতরের জয়েন্ট ডাইরেক্টর অজয় কুমার দাস বলেন, “একটি বাঘ গ্রামে ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে আমাদের কর্মীরা এলাকায় চলে এসেছেন। বাঘটির অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছে। বাঘটিকে ধরতে খাঁচা পাতা হয়েছে। আমরা অপেক্ষায় আছি যাতে দ্রুত বাঘটিকে ধরা সম্ভব হয়।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের ডিএফও মিলন কান্তি মণ্ডল বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা ধানক্ষেতটিকে জাল দিয়ে ঘিরে দিয়েছি। আশপাশ থেকে মানুষদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে কোথাও বাঘে মানুষে সংঘাত না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *