আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৪ ফেব্রুয়ারি: “দীনেশ ত্রিবেদী গদ্দার, বেইমান। দলের সঙ্গে বেইমানি করে বিজেপির হাত ধরছে। ওর থাকা বা না থাকায় দলের কিছু আসে যায় না। ও লোকসভায় হারের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬ মাসের মধ্যে ওকে রাজ্যসভার সাংসদ করল। সেই লোকটা দলের সঙ্গে গদ্দারি করে চলে গেল। এভাবেই দীনেশ ত্রিবেদীর সমালোচনা করলেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
নোয়াপাড়ার পলতা বাস স্ট্যান্ড থেকে শ্যামনগর চৌরঙ্গী পর্যন্ত ঘোষপাড়া রোডে নোয়াপাড়া বিধানসভা এলাকার তৃণমূল কর্মীরা রবিবার বিকেলে বিশাল সংহতি যাত্রা করে। সেই মিছিলে অংশ নিয়ে দলত্যাগীদের কড়া সমালোচনা করে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, এদের শুধু লোভ লোভ আর লোভ। আমাদের দল ছেড়ে যারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছে তারা সবাই বেইমান। অতিরিক্ত কিছু পাওয়ার লোভে দল ছেড়েছে। এরাই আবার বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃতীয় বারের জন্য মা মাটি মানুষের সরকার গঠন হওয়ার পর দলে ফিরতে লাইন দেবে। কাঁদতে কাঁদতে ওদের লাইন দিতে হবে তৃণমূল ভবনের বাইরে। দল ওদের ফেরাবে কি না সেটা শীর্ষ নেতৃত্ব ভেবে দেখবে, তবে আমার ব্যাক্তিগত মত হল গদ্দারদের ছুঁড়ে ফেলে দাও। এদের নরকেও যাতে জায়গা না হয়। কেউ যাতে দলে ফিরতে না পারে। দীনেশ ত্রিবেদী বিধানসভা ভোটে কোনও প্রভাব ফেলবে না।”
তৃণমূলের এই সংহতি যাত্রা অন্তত ১৫ হাজার তৃণমূল কর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে নেতৃত্ব দিতে এসে তৃণমূল নেতা মদন মিত্র সাংবাদিকদের বলেন, “খেলার মাঠ প্রস্তুত। দলের কর্মীরা মাঠে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ওরা যদি মনে করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানুষের সমর্থনে খেলা হবে, তবে সেই খেলাই হবে। যদি ভাবে মাথা দিয়ে খেলবে, আমরা প্রস্তুত। আর যদি ভাবে ৯ এম এম দিয়ে খেলবে, বাংলার মানুষ জানে ৯ এম এম কোথায় ঢুকিয়ে দিতে হয়। এবার সিং পরিবার এই ভাটপাড়া, নোয়াপাড়া, ব্যারাকপুরে এমন ভাবে হারবে যে ওদের দুবাইয়ের হোটেলে গিয়ে থাকতে হবে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের এই সংহতি যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি দেবরাজ চক্রবর্তী, ব্যারাকপুর পৌরসভার প্রশাসক উত্তম দাস, টিটাগড় পৌরসভার প্রশাসক প্রশান্ত চৌধুরী, গারুলিয়া পৌরসভার পৌরপ্রশাসক সঞ্জয় সিং, ভাটপাড়ার অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নৈহাটির অশোক চট্টোপাধ্যায় সহ ব্যারাকপুর মহকুমার সর্বস্তরের তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।
এদিনের তৃণমূলের মিছিল থেকেও শ্লোগান ওঠে, বিজেপির চামড়া, তুলে দেব আমরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি নোয়াপাড়া এলাকায় একই রুটে মিছিল ও সভা করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী, অর্জুন সিং, সুনীল সিংরা। বিজেপির সেই মিছিলের পর এদিনের তৃণমূলের সংহতি যাত্রা কার্যত তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনের মিছিল ছিল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।