পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১ আগস্ট: সন্তান তাঁদের ছেলের নয়, এমন অভিযোগেই তিন বছরের নাতিকে খুন করল ঠাকুরদা ও ঠাকুরমা। ঘটনায় জড়িত থাকবার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধেও। রবিবার এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার পূর্ব হরসুরার বিন্নাকুড়ি এলাকায়। মৃত শিশুর মায়ের অভিযোগ, তার ছেলেকে কিছু খাইয়ে দিয়েই খুন করেছে ঠাকুরমা ও ঠাকুরদা। যদিও ঠাকুরমার দাবি, অসুস্থতা থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃত শিশুর বাবা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর নাম রোশন দাস, বয়স ৩ বছর। বাবা কৈলাশ দাস এখনও পর্যন্ত চারটি বিয়ে করেছেন বলে পরিবার সুত্রের খবর। দেবকি দাস কৈলাশ দাসের চতুর্থ স্ত্রী। বাকি তিন স্ত্রীর কেউই তাদের সাথে থাকেন না। কেউ বা ডিভোর্স দিয়েছেন আবার কেউ তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু আগের পক্ষের একটি পুত্র সন্তান কৈলাসের সাথেই রয়েই গেছে। এরপর কয়েক বছর আগে কৈলাশ দাস চতুর্থ স্ত্রী দেবকী দাসকে বিয়ে করেন। বিয়ের বেশ কিছুদিন পরেই তারা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, সেই সন্তান জন্মের পর থেকেই কৈলাশের পরিবারের ধারণা জন্মায় যে ওই সন্তান তাদের ছেলের নয়। আর এমন ধারণা থেকেই ঠাকুরদা নরেশ দাস ও ঠাকুরমা পানাবতী দাস নাতি রোশন দাসের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, মেরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেবে বলেও একাধিকবার তারা হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল বলেও অভিযোগ মৃত শিশুর মায়ের। আর যারপর এদিন এমন ঘটনা সামনে আসতেই সরাসরি খুনের অভিযোগ তুলেছে শিশুর মা দেবকি দাস। একই অভিযোগে সরব হয়েছেন প্রতিবেশীরাও।
এলাকার দুই প্রতিবেশী সঙ্গীতা দাস ও নিতাই দাসদের অভিযোগ, ঠাকুরমা ও ঠাকুরদা মিলে কিছু খাইয়ে দিয়ে খুন করেছে তাকে।কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।
যদিও মৃত শিশুর ঠাকুরমা পানাবতী দাস তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, অসুস্থ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। যে অভিযোগ করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তা ঠিক নয়৷
এদিন এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর পেতেই এলাকায় ছুটে আসে তপন থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। তারা এসে মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি ঠাকুরমা ও ঠাকুরদাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে ওই শিশুর বাবা।
তপন থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুজনকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।