উত্তর দিনাজপুরে বয়রা কালী মন্দিরে তিন হাজার পাঁঠাবলি হয়, এবার সব বন্ধ

স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ৭ নভে: একসময় শ্রীমতি নদী দিয়ে বড় বড় নৌকা আর বজরা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে বানিজ্য করতে আসতেন বনিকেরা। নৌকা নোঙর করে বিশ্রাম নিতেন নদীর ধারে জঙ্গলাকীর্ণ অরন্যে। সেখানেই বয়রা গাছের নীচে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এক বনিক৷ দেবীর স্বপ্নাদেশ পান ওখানেই মূর্তি দিয়ে কালীপুজো করার৷ কথিত আছে সেই বয়রা গাছের তলায় প্রথম পুজো শুরু হয় উত্তর দিনাজপুর তথা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী কালীমন্দির “বয়রা কালীবাড়ি”র পুজো। পরবর্তীতে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা সেই জঙ্গল পরিস্কার করে তৈরি করে বাঁশ ও মাটির মায়ের মন্দির।

এরপর ১৯৬২ সালে তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির যা আজ বয়রা কালীমন্দির নামে বিখ্যাত। মায়ের মূর্তিও হয়েছে অষ্টধাতুর। দীপাবলির রাতের বয়রা কালীবাড়ির পুজোকে ঘিরে কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের আলাদা উন্মাদনা থাকে। কয়েক লক্ষ পূন্যার্থীর সমাগম ঘটে। দুই-তিন হাজার পাঁঠাবলি হয়। কয়েক হাজার ভোগ পড়ে এই মন্দিরে। কিন্তু এবছর নিয়ম করে পুজো করা হবে তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে মন্দির চত্বরে। জনসমাগম আটকাতে এবছর বয়রা কালীমন্দিরে ভোগ দেওয়া যাবেনা বন্ধ থাকবে মানতের পাঠাবলিও।

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহরে রায়গঞ্জ- বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে অবস্থিত বয়রা কালীবাড়ির শ্যামাপুজো বহু প্রাচীন। বয়রা কালীমাতার পুজো ঘিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে কালিয়াগঞ্জ শহরে। মায়ের অষ্টধাতুর মূর্তিতে সারা অঙ্গজুড়ে থাকে সোনার অলঙ্কার। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে মন্দির কর্তৃপক্ষ কিংবা ভক্তরা জানিয়েছেন, এখানে মা বয়রা কালীমাতার কাছে মানত করলে তা ফলে যায়। এরফলে মানত পুরন করতেই হাজার হাজার ভক্ত আসেন পূজো দিতে। এবছর করোনা আবহের কারনে দীপাবলির রাতে মন্দিরে ভীড় এড়াতে মানতের ভোগ ও বলি বন্ধ রাখা হয়েছে। নিয়ম নিষ্ঠার সাথে মায়ের পুজোটুকুই করা হবে এবার। পুজো মন্ডপ বা মন্দির চত্বরে ভক্তদের প্রবেশাধিকার থাকবেনা এবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *