মাধ্যমিকের সেরা দশে জায়গা পেল দক্ষিণ দিনাজপুরের তিন কৃতি, অঙ্কিত, তাহেনুজ্জামান ও রুপসার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৫ জুলাই: করোনার ঘরবন্দি দশাতেও খুশির খবর দক্ষিণ দিনাজপুরে। মাধ্যমিকের সেরা দশে জায়গা পেল জেলারই তিন কৃতি ছাত্র-ছাত্রী। রাজ্যে পঞ্চম, অষ্টম ও দশম স্থান অধিকার করে সফলতা ছিনিয়ে আনলো অঙ্কিত সরকার, মহম্মদ তাহেনুজ্জামান ও রুপসা সাহা। ২০২০ এর ঘোষিত ফলাফলের মেধাতালিকার প্রথম দশে স্থান করে নিয়েছে দক্ষিন দিনাজপুরের বংশীহারি হাইস্কুলের ছাত্র অঙ্কিত সরকার, বংশীহারির সিহল হাইস্কুলের ছাত্র মহঃ তাহেনুজ্জামান ও বালুরঘাট গালর্স হাইস্কুলের ছাত্রী রুপসা সাহা। অঙ্কিত সরকার ৬৮৮ নম্বর পেয়ে উত্তরবঙ্গে প্রথম স্থানাধিকারের পাশাপাশি রাজ্যে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। ৬৮৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে মহঃ তাহেনুজ্জামান। অন্যদিকে জেলার সদর শহর বালুরঘাটের মেয়ে রুপসা সাহা ৬৮৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে।

বুধবার মধ্য শিক্ষা পর্ষদ ২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। কোভিড ১৯ অতিমারির জেরে এবার নির্ধারিত সময়ের থেকে অনেক দেরী করে ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। পরীক্ষা শেষের ১৩৯ দিন পর ফলাফল প্রকাশ হলেও জেলাবাসীকে নিরাশ করেনি তিন কৃতি ছাত্র-ছাত্রী। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ দ্বারা প্রকাশিত মেধা তালিকা সূত্রে খবর, মাধ্যমিকে রাজ্যে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে বংশীহারী হাই স্কুলের ছাত্র অঙ্কিত সরকার তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। জানা গেছে, অঙ্কিতের পরিবার বুনিয়াদপুরে ভাড়া থাকতেন, বাড়ি মালদা জেলার বাঁশবাড়ি এলাকায়। তাঁর বাবা ফিরোজ খান পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক। মা সুলতানা নারগিজ গৃহবধূ।

বংশীহারির সিহল হাইস্কুলের ছাত্র মহঃ তাহেনুজ্জামান। ৬৮৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেছে সে। মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী বাবা মহঃ মুক্তুজ্জামান বড় ছেলেকে বংশীহারি মিশনে রেখেই পড়াশুনা করাতেন। এদিন সকালে ছেলের এমন সফলতায় উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন পরিবারের সকলেই।

মহঃ তাহেনুজ্জামান জানিয়েছেন, এরকম একটা রেজাল্টের আশা করেছিলেন তিনি। মিশনে থেকেই পড়াশোনা করেছেন। তাই এই রেজাল্টের পিছনে শিক্ষক শিক্ষিকা ও বাবা মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। আগামীতে মেডিকেল নিয়ে পড়াশুনা করে চিকিৎসক হতে চান তিনি।

এদিকে মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম স্থানের অধিকারী রুপসা সাহা বালুরঘাট গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। বালুঘাট শহরের চকভবানী এলাকার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক গৌতম সাহার মেয়ে রুপসা। এবারে টেস্ট পরীক্ষাতেও সে আশানুরূপ ফল করেছিল। ফলে স্বভাবতই মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল এর আশায় ছিলেন বাড়ির সকলে। এদিন ফল প্রকাশের পরেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠে মেধাবী ছাত্রী।

আগামীতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে রুপসা সাহার। রুপসা জানিয়েছে, প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন করাটাই তার কাছে একটা বড় কাজ ছিল। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বাড়তি কোনো সময় দিয়ে পড়তে হয়নি তাকে। তার এই সাফল্যের জন্য স্কুল শিক্ষিকা গৃহ শিক্ষিক থেকে শুরু করে অভিভাবক অভিভাবিকাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে রুপসা।

রুপসার মা সুমন সাহা ও বাবা গৌতম সাহা জানিয়েছেন, তাদের মেয়ে ভালো ফল করবে এটা আশা করেছিলেন। স্কুল শিক্ষকদের আশা পূর্ণ করেছে সে। আগামী দিনে এগিয়ে যাওয়ার পথে মেয়েকে সবধরনের সহযোগিতা করবে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *