আমাদের ভারত, ১ আগস্ট: রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তের সবচেয়ে চর্চিত বিষয় বাঙালি অস্মিতা। রাজ্যের শাসক দলের তরফে ভাষা আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি লাঞ্ছিত হচ্ছেন বলে যখন তৃণমূল কংগ্রেস সরব, তখন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝির প্রশ্ন, তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষরা বাঙলা ভাষার সম্মান নিয়ে এতো উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। অথচ মসজিদের আজান কেন বাংলায় হয় না? যখন সেই প্রশ্ন করা হয় তখন তারা নিরব। তারা কেন বাঙলা ভাষায় আজানের দাবি তোলেন না?
বাংলা ভাষা ও বাঙালির পরিচয়ের প্রশ্নে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তিনিকেতনের পর জঙ্গলমহলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে ভাষা বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে সরব তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অপমান ও নির্যাতন হচ্ছে, যা কিনা বিজেপি নেতৃত্বের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালিদের হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বাংলা ভাষার উপর নেমে এসেছে আক্রমণ। অবমাননা ও অবহেলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে। এমনকি বাংলা ভাষার অতীত স্মরণ করিয়েছেন অমর্ত্য সেনও।
এতকিছুর মধ্যে মোক্ষম প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি। বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলনকারী ধর্মনিরপেক্ষ তথা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি প্রশ্ন তুলে লিখেছেন, “যে যে সেকুলার এবং মুসলিম ভাইয়েরা বাংলা ভাষা নিয়ে মান, অপমান, চুলচেরা বিশ্লেষণ ও গবেষণা করছেন তাদের কাছে করজোড়ে একটা অনুরোধ করছি যেন তারা এবার থেকে মসজিদে বাংলা ভাষায় আজান দেওয়ার জন্য আওয়াজ তোলেন। এটি বাংলা ভাষার প্রতি বিরাট সম্মান জ্ঞাপন হবে। শুধু বাংলায় নয়, বরং গোটা দেশের সব মসজিদে যেন সেখানকার ভাষায় আজান দেওয়া হয়।”
একথা ঠিক যে কেবল রাজ্যে নয়, দেশের সমস্ত মসজিদে আজানে কিন্তু কখনো স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা হয় না। কেন তা হবে? কেন বাংলা, তামিল, গুজরাটি অসমিয়ার মতো ভাষায় আজান দেওয়া হবে না? বাঙালি অস্মিতা নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতিতে এই প্রশ্ন তুলেছেন দেবদত্তবাবু।
যখন ভাষা আন্দোলনে নেমে শিলিগুড়ি, ধূপগিরি
পুরসভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, এলাকার সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সাইনবোর্ড বাংলা ভাষাতেই লিখতে হবে। তখন কেন ধর্মীয় ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে এভাবে অচ্ছুত করে রাখা হবে? এই প্রশ্ন এবার উঠতে শুরু করেছে একাধিক মহলে।