স্নেহাশিস মুখার্জি, নদীয়া, ১৬ সেপ্টেম্বর: সম্প্রতি বিজেপির রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নাম জড়িয়েছিল পরকীয়া প্রেমে, সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবার একই অভিযোগে নাম জড়াল নদীয়া দক্ষিণের যুব মোর্চার সভাপতি ভাস্কর ঘোষের। তবে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সাংসদের পর যুব মোর্চার সভাপতির নাম জড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে যার প্রেমে নদীয়া যুব মোর্চার সভাপতি হাবুডুবু খাচ্ছেন এবং মোবাইল সেক্স করতে চাইছেন সেই মহিলাই বা কে?
গত পরশু সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে কিছু কুরুচিকর মন্ত্যব্য ভাইরাল হয়। প্রবীর মজুমদার নামে এক ব্যক্তি পোস্ট করে– “বিজেপির নদীয়া জেলার যুব মোর্চার সভাপতি ভাস্কর ঘোষের কেলোর কীর্তি দেখুন….. মহিলারা ঝাঁটা নিয়ে তৈরি আছে।” বিক্রম দেবনাথ নামে আর এক ব্যক্তি বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি ভাস্কর ঘোষের নেতা হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি জনৈক ব্যক্তি– “ওসব ওদের করতে লাগে, ওটাই ওদের নীতি,” বলে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট এর মাধ্যমে তাঁর মন্তব্য ভাইরাল করেন।
অপরদিকে” চিন্তা নেই দিদি আছেন,” এই প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হয়– “দেখুন কী চরিত্রহীন অসভ্য বিজেপি নেতারা, আপনারা ভোট দেবেন বিজেপিকে? এছাড়াও সুজন ঘোষ নামে এক ব্যক্তি পোস্ট করে লেখেন দেখুন, “মহিলার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে মন্ডলে মন্ডলে মারামারি। এরা নাকি ২০২১ এ সরকার বানাবে? যৌনাচারী বিজেপি হাটাও দেশ বাঁচাও।” এছাড়া গত ১৩ তারিখে দিদির সৈনিক নামে ফেসবুক পেজ থেকে একই ভাবে কুরুচিকর মন্তব্য ভাইরাল করা হয়।
যাকে নিয়ে এত সমালোচনা সেই নদিয়া যুব মোর্চার সভাপতি ভাস্কর ঘোষ জানান, দিদির সৈনিক নামে একাউন্ট এবং যে সমস্ত ব্যক্তি এই পোস্টটা করেছেন তাদের বলছি ফেসবুকে পোস্ট করার আগে এডিটিং টা ভালো করে শিখবেন। পাশাপাশি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যালেঞ্জ জানান, “যদি এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন তাহলে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেব আপনাদের এবং রাজনীতি থেকে সারা জীবনের জন্য সরে যাব, কারণ রাজনীতিটা আমরা দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে করি।”
এরপর গতকাল এই যুব মোর্চার সভাপতি তাঁর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণনগর সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগে জানান, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে তাঁর যথেষ্ট সম্মানহানি হয়েছে এবং আত্মহত্যা করার মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে। তাই তিনি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আবেদন করেছেন।
নদিয়া জেলা দক্ষিণের বিজেপির সভাপতি অশোক চক্রবর্তী জানান, সারা পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন স্তরের যে সব নেতা পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির দিশা স্থির করছেন সেই নেতৃত্বদের বিরুদ্ধেই এরকম অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি যতোটুকু ভাস্কর সম্বন্ধে জানি, তাতে আমার এই জিনিস বিশ্বাস হয় না। যারাই প্রচার করছে তারাই রাজনৈতিক অভিসন্ধি চরিতার্থ করতে প্রচার করছে এবং আমাদের নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই লাভ হতে পারে শাসক দলের। তবে আমরা আশঙ্কা করছি এর পেছনে শাসক দলের কোনো না কোনো রকম চক্রান্ত রয়েছে।