আমাদের ভারত, নন্দীগ্রাম, ৩ জানুয়ারি: ২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি জমি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল নন্দীগ্রামে। পরের বছর ২০০৮ সাল থেকে প্রত্যেক বছরই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে বশ্যতা বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অনুষ্ঠান হয় গড় চক্রবেরিয়ার ভুতার মোড়ে দিনটির স্মরণে। ব্যতিক্রম এবছর শুভেন্দুকে ছাড়াই এবছর ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে হচ্ছে অনুষ্ঠান। রাজ্য রাজনীতিতে সমীকরণের পরিবর্তন ঘটে গেছে। নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের নেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এ বছরের অনুষ্ঠানে ছিলেন আন্দোলনে যুক্ত থাকা তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস, এসইউসিআই ও উলেমা হিন্দ সহ সব দলের নেতা ও কর্মীরা কিন্তু ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী।
২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি কালিচরণপুর পঞ্চায়েত অফিসে প্রথম নন্দীগ্রামের জমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি হয়। এরপরেই এই নোটিশ ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে নন্দীগ্রামবাসী। শুরু হয় জমি আন্দোলন। কালিচরণপুর পঞ্চায়েত অফিস ঘিরে বিক্ষোভ দেখান কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরে বিক্ষোভকারীরা ক্ষেপে গিয়ে পুলিশের জিপে আগুন লাগিয়ে দেয় এই ভুতারমোড়ে। এরপরে নন্দীগ্রামের চারদিকে রাস্তা কেটে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে শুরু হয় অবরোধ। তারপর থেকেই শুরু হয় তৎকালীন বাম সরকারের সঙ্গে নন্দীগ্রামবাসীর বিরোধ। এরপরেই গঠিত হয় নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। আন্দোলনের সময় থেকেই এই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী।
২০০৮সাল থেকে শুরু হওয়া বিগত বছরের অনুষ্ঠানগুলোতে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্য ভূমিকায় থেকেছেন। পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন মহাশ্বেতা দেবী, মেধা পাটেকর সহ বহু রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এবছরই তার ব্যতিক্রম ঘটেছে। এবারের এই অনুষ্ঠানে থাকছেন না শুভেন্দু অধিকারী।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনে অংশনেওয়া তৃণমূল নেতা সুফিয়ান জানিয়েছেন, এবারে ভুতামোড়ে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে বশ্যতা বিরোধী দিবস উদযাপন সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব দোলা সেন ও পূর্ণেন্দু বসু সহ একাধিক ব্যাক্তিত্ব। সেখ সুফিয়ান আরো জানিয়েছেন, বিরাট জনসমাবেশের মাধ্যমে আজকের দিনটি পালন করা হবে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে।