এই ডায়মন্ড মডেলের “আস্ফালন” আসলে ভয় থেকে জন্মেছে

সৌরভ চক্রবর্ত্তী
আমাদের ভারত, ৪ নভেম্বর: ডায়মন্ড মডেলের “আস্ফালন” আসলে আস্ফালন নয়। এই আস্ফালন মূলত ভয়ের বহিঃপ্রকাশ।

কিসের ভয়?
শুনুন — লক্ষ কোটি টাকার একটা বড় অংশ ইতিমধ্যেই বিদেশে পাচার করা আছে; অনেক জিনিস বেনামে রাখা হয়েছে। যতদিন ক্ষমতায় তারা থাকবে, সেই বেনামী টাকা নিরাপদ — কারণ ক্ষমতাসীন দলের ভয়াবহ ক্ষমতার সামনে কেউ সাহস করে তা ছুঁতে পারবে না। কিন্তু একবার ক্ষমতাচ্যুত হলে সেই সম্পত্তি একেবারেই উধাও হয়ে যেতে পারে। অনেক অটোক্র্যাটিক শাসকের টাকাই এমনভাবে ‘মায়ের ভোগে’ চলে গেছে — পশ্চিমে, পূর্বে এমন উদাহরণ আছে; এখন তারা নিজেদের টাকা পাশ্চাত্য দেশ বা দুবাইয়ে সম্পত্তি কেটে বা নানা পথে বিনিয়োগ করে রাখে।

আমাদের দেশেও তাই হয়েছিল — আইরন লেডির আকস্মিক মৃত্যুর পর অনেকে তাদের টাকায় বড় বিপর্যয় দেখেছেন; ১৯৮০–৮৪ সালের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের বদল ও ১৯৮৪–৮৯ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এটাই ইঙ্গিত করে। ডায়মন্ড কেলেঙ্কারিটা এসব পরিস্থিতিকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। ক্ষমতা রক্ষার জন্য বিলি-বণ্টনের পরও বিপুল পরিমাণ কালো টাকা বেনামে থাকলে, সেটি যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্যই এই প্রদর্শনী — যে তারা শক্তভাবে টিকে থাকবে। যখন পারিবারিক দল ও স্বৈরশাসন একসাথে থাকে, তখন এমন ঘটনা অনিবার্য হয়ে ওঠে। ফলে তাদের পতনের পর এই বিপুল বেনামী সম্পদ ‘মায়ের ভোগে’ চলে যায় — আর তাই ক্ষমতায় থাকতে তারা মরিয়া চেষ্টা চালায়, এবং কখনো কখনো অস্থিরতা-সৃষ্টি করে দেখাতে চায় যে ক্ষমতা হাতছাড়া হবে না, যাতে আগেই কেউ তাদের টাকায় ছুতে না পারে।

সাধারণ মানুষকে SIR, NRC, বাঘ, ভাল্লুক, ভূত, ভাতা ইত্যাদির ভয় দেখিয়ে সেই পরিবেশ তৈরি করে নিজেদের ক্ষমতা ও সম্পত্তি’কে বাঁচাতে চাইছে।

সামনে ছেড়ে দিচ্ছে নিম্ন স্তরের দলীয় কর্মীদের। যারা মারামারি করবে, কেস খাবে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে শহীদ হবে..

সেই লাশকে কাজে লাগিয়ে এবারও ৫টা বছর চলবে জনগনের টাকা লুঠ।

সাবধান বাঙালি, খুব সাবধান।

লেখক পরিচিতি:
সৌরভ চক্রবর্ত্তী,
Management Consultant ও সমাজ কর্মী
বিদ্র: বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *