Sukanta, BJP, মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ ইঙ্গিতেই রাজ্যে এই নৈরাজ্য, সরব সুকান্ত

আমাদের ভারত, ১২ এপ্রিল: ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় রাজ্যে একাধিক জায়গায় যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও তার দলের নেতারা বিজেপির দিকে আঙ্গুল তুলছেন। কিন্তু তাদের এই অভিযোগকে যুক্তি দিয়ে নস্যাৎ করে বেশ কিছু পাল্টা প্রশ্ন করে রাজ্যজুড়ে এই নৈরাজ্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও তার দলকেই দায়ী করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বেশ কিছু প্রশ্ন যেমন তুলেছেন, তেমন একাধিক বিষয়কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাবেই দাবি করেছেন, রাজ্যের হিন্দুরা এখন বুঝতে পারছে “এই নৈরাজ্য আপনার (মুখ্যমন্ত্রীর) প্রত্যক্ষ ইঙ্গিতেই ঘটেছ।”

সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, “মুর্শিদাবাদের নিরীহ হিন্দুদের উপর মৌলবাদী জেহাদীদের চূড়ান্ত নির্যাতনের পরেও আপনার দীর্ঘ নীরবতা পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাঙালি হিন্দুর মনে গভীর আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ঠিক যেমন অতীতে সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন) বিরোধী আন্দোলনের সময় আপনি ধারাবাহিক উসকানিমূলক মন্তব্য করে সংখ্যালঘু সমাজকে বিভ্রান্ত করেছিলেন এবং আন্দোলনটিকে সম্পূর্ণ সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন, এবারেও আপনি সেই একই ‘আগুনে ঘৃতাহুতি’ দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অতএব, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আপনি যে প্ররোচনার অভিযোগ এনেছেন, তা এখানে কোনওভাবেই প্রযোজ্য নয়, বরং এই নৈরাজ্য আপনার প্রত্যক্ষ ইঙ্গিতে ঘটেছে—এমন সমস্ত প্রমাণ পশ্চিমবঙ্গের শান্তিপ্রিয় বাঙালি হিন্দুদের কাছে রয়েছে।”

এই ইস্যুতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন। সেগুলো হলো-

১/ মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি অনুমতি ছাড়া কলকাতায় ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে এত বড় সংখ্যালঘু সম্মেলন কোনওভাবেই অনুষ্ঠিত হতো না।

২। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য, সাম্প্রদায়িক নেতা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে বলেছেন যে, ওই সমাবেশের ভিড় দেখে মুখ্যমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকেও এত বড় সমাবেশের জন্য অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে রাজ্য সরকার কোনো কাজ করেনি বলে অভিযোগ করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী প্রকাশ্যে কলকাতা স্তব্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছেন। প্রথমে ‘জেলা টাইট’ (শাটডাউন) করার কথা বলেন। আপনি কি কোনও ব্যবস্থা নিয়েছেন?”

“উত্তর কলকাতায় কলকাতা পুলিশের সামনে এক নিরীহ হিন্দু বাস চালককে হিন্দুদের পবিত্র গেরুয়া পতাকা বাস থেকে খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে। এমন চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িক ঘটনার পরেও আপনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কি কোনও পদক্ষেপ নিয়েছেন?”

সুকান্তবাবুর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করে নিরীহ হিন্দুদের মনে গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করতে। যাতে নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী নিজের ভোট ব্যাঙ্ককে কৌশলে আবারও কাজে লাগাতে পারেন।

তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সিএএ আন্দোলনের সময়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু সমাজকে বিভ্রান্ত করে আন্দোলনকে হিংসাত্মক করে তুলেছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হিন্দুদের বিপুল ক্ষতির পরেও মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীকে ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন। এবারেও তিনি একই কায়দায় সংখ্যালঘু সমাজকে ভুল পথে চালনা করে রাজ্যে অশান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছেন, যার পরিণাম আজ মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দৃশ্যমান।

তবে ভুলে যাবেন না—অতীতেও সংবিধানের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে আপনার কোনো অপচেষ্টা সফল হয়নি। এবারেও মুখ্যমন্ত্রী এবং তার উন্মত্ত ভোট ব্যাঙ্ক ব্যর্থ হবে, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।

সবচেয়ে বড় কথা, একটি কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করা মানে দেশের সংবিধান ও দেশের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্বকে অপমান করা। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের সংবিধানের শপথ নিয়ে একটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ার পরেও এমন বেআইনি ও চূড়ান্ত অসাংবিধানিক কাজ করার সাহস দেখালেন। প্রকাশ্যে দেশদ্রোহিতা করে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর কোনও অধিকার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *