আমাদের ভারত, ২৪ সেপ্টেম্বর: “রেশনের চাল, মিড ডে মিলের বরাদ্দ সামগ্রী, অতিমারির অনুদানের বরাদ্দ ও টিকা, ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দের অর্থ চুরির পর ’চোরদের সরকারের নতুন কীর্তি -স্কুল পোষাকের কাপড় কেনার সময় চুরি।”
শনিবার সামাজিক মাধ্যমে এই অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লিখেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চারিদিক থেকে চেপে ধরায় দুর্নীতির পথ বন্ধ হয়ে আসছে এই চোরেদের সরকারের। তাই নতুন ফন্দি আঁটতে হচ্ছে কিভাবে কালো টাকা আয় করা যায়।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের সমগ্র শিক্ষা অভিযানের মাধ্যমে পাওয়া ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে স্কুল ইউনিফর্ম বিলি করে থাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে কি করে কাটমানি খাওয়া যায় সেই উপায় বার করে পিসি ভাইপো। এর আগে স্কুলগুলিকে পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম তৈরির টাকা পাঠাত রাজ্য সরকার। যা আসলে কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ। সেই টাকা খরচ করে স্কুলগুলি নিজেরাই পড়ুয়াদের পোশাক বানিয়ে নিত। তাই এর থেকে বিশেষ কিছু সরানো যেত না।
তাই নতুন ফন্দি আঁটা হল। ইউনিফর্মের কাপড় ভিন রাজ্য থেকে আসছে, এতে কিছু ব্যবসায়ী লাভবান হচ্ছে কিন্তু রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বয়ন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আক্ষেপের সুর শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। আসলে দুর্নীতির সুর বেঁধে দেওয়া হল। যেমন বলা তেমন কাজ। নয়া নির্দেশিকা জারি করে বলা হল, স্কুলগুলির ইউনিফর্মের জন্য রাজ্যের সংস্থাগুলির থেকে কাপড় কিনবে রাজ্য সরকারের অধীনস্ত সংস্থা। একটা ডিপার্টমেন্ট কাপড়গুলি সংগ্রহ করবে, তাই বিভিন্ন রঙের নয়, নীল সাদার মধ্যেই তা সীমিত রাখা হবে।
এতে আরও সুবিধা হল, অর্ডার দেওয়ার সময় কাটমানি সরানোর সুযোগ একেবারে হাতের মুঠোয়। উপরন্তু ইউনিফর্মের ওপর বিশ্ব বাংলার লোগো বসিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে, আর একটা স্টিকার প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে দেওয়া গেল। কৃতিত্ব দাবি করতে আর কোনো অসুবিধে নেই।
কিন্তু দুর্নীতি কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয় না। দুভাবে সমস্যা দেখা দিল। প্রথমত রাজ্যের শতাব্দী প্রাচীন বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা ও প্রাক্তনীরা আওয়াজ তুললো, স্কুলের নিজস্ব ইউনিফর্ম রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর ফ্যাসিস্ট ভাবনা প্রতিষ্ঠার জন্য সেই ইউনিফর্ম বদলে দেওয়া হলে স্কুলের ঐতিহ্যকে অপমান করা হয়, এটা তারা মানবে না। এই আন্দোলন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে রাজ্য সরকার এখন পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।”