স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ২৭ অক্টোবর: পুজো শেষ। শেষ দশমীর প্রতিম বিসর্জনের পালা। তা সত্বেও বিসর্জনের ঘাটগুলিতে গেলে এখনও আপনি দেখতে পারবেন এক দল উৎসুক মানুষের ছোটাছুটি। জল থেকে তুলে আনছে একের পর এক প্রতিমার কাঠামোগুলি। কারন দেবী বিসর্জনের পর কাঠামোগুলি বিক্রি করে হাতে আসে বাড়তি পয়সা।
নীলকন্ঠ পাখীর চেনানো পথ ধরে উমা ফিরে গিয়েছেন পতিগৃহ কৈলাসে। ঘরে ঘরে মেয়েকে বিদায় জানিয়ে যখন সকলে শোকাচ্ছন্ন, তখন বিসর্জনঘাটগুলিতে দেখতে পাবেন নদীর জলে এক দল মানুষের ছোটাছুটি। এরা সকলেই প্রতিমার কাঠামো জল থেকে তুলে আনার জন্য ব্যস্ত। তবে কাঠামো তোলার ঝক্কি তো কম নয়। হাঁটু বা গলা জলে নেমে কাঠামো তুলে আনতে অনেকেরই হাত-পা কেটে যায়। কিন্তু তাতেও উৎসাহেত খানতি নেই। কারন কাঠামোগুলি বিক্রি করে তাদের হাতে আসে কিছু অর্থ। অনেকে কাঠামোগুলি সংরক্ষণ করে রাখেন পরবর্তী কোনও প্রতিমা তৈরির জন্য। এরা কেউ ফুচকা বেচেন, কেউবা রিক্সা চালান। কিন্তু দশমী বিসর্জনের পালা শেষ হতেই বছরের পর বছর বিসর্জন ঘাটগুলিতে ভিড় জমান এরা। আধ গলায় দাঁড়িয়ে খুশিতে মেতে ওঠেন বাড়তি রোজগারের আশায়। নানান রঙ ও হাজার হাজার টাকা অলঙ্কার সব কিছুই ভেসে গেছে নদীর জলে। বিসর্জনের পর নদীর জলে তাই দেবী প্রতিমার কঙ্কালসার কাঠামোগুলি ভেসে বেড়ায় এদিক ওদিক। এগুলির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ না থাকলেও গরিব এই মানুষগুলো কিন্তু অক্লান্ত পরিশ্রমে সংগ্রহ করে প্রতিমার কাঠামোগুলি৷ কারন এগুলো দিয়ে তাদের ভাঙা বাড়িটাকে একটু সোজা করে দাঁড় করাতে পারবে।