আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৪ জুন: পৌরসভার ভেতরে কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রকাশ্যে গণ্ডগোলের জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্তর্গত গারুলিয়া পৌরসভায়। পৌরসভায় বোর্ড মিটিং শুরু হওয়ার আগেই তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় কাউন্সিলরদের মধ্যে। সেই উত্তেজনা সামাল দিতে হিমশিম খেলেন পুরপ্রধান।
স্থানীয় প্রশাসনিক স্তরে এলাকার কাজকর্ম, উন্নয়ন- অনুন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করতেই সমস্ত পৌরসভায় করা হয় বোর্ড মিটিং। যেখানে স্থানীয় পৌরসভার অন্তর্গত সমস্ত ওয়ার্ডের শাসক ও বিরোধী কাউন্সিলররা যেমন অংশ নিতে পারেন, ঠিক তেমন ভাবেই শুক্রবার দুপুরে গারুলিয়া পৌরসভায় সকল কাউন্সিলরদের নিয়ে বোর্ড মিটিং ডেকেছিল পৌরপ্রধান। সেই মত সকলে পৌরসভায় এসে উপস্থিত হন। কিন্তু এর মাঝে গারুলিয়া পুরসভায় ঘটলো বেনজির ঘটনা। গারুলিয়া পুরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ডে নির্দল কাউন্সিলর রয়েছেন। অপর আরেকজন সিপিআইএমের কাউন্সিলর। তবে আজ গারুলিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকসুদ হাসান বোর্ড মিটিং শুরু হওয়ার আগে নিজের দাবি দাওয়া তুলে ধরে মিটিং বানচাল করার চেষ্টা করেন। তিনি অন্যান্য কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিং এ যেতে একপ্রকার বাধা দিতে শুরু করেন। বোর্ড মিটিং রুমের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের অন্যান্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন নির্দল কাউন্সিলর মকসুদ হাসান। পাল্টা তৃণমূল কাউন্সিলরাও মিটিংয়ে যেতে বাধা পেয়ে নির্দল কাউন্সিলরের সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। যদিও কাউন্সিলর তার দাবি দাওয়া জানিয়ে দেন পুর প্রধানকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পৌর প্রধান নিজে ঘটনাস্থলে আসেন এবং বিদ্রোহী কাউন্সিলরকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতে শুরু হয় পৌর প্রধানের সঙ্গে বচসা। বিদ্রোহী কাউন্সিলর মকসুদ হাসান বলেন, এলাকার একাধিক রাস্তা খারাপ। স্থানীয় শ্মশান ঘাটও মাঝেমধ্যে বন্ধ করে দেয় পুরসভা। সেই বিষয়গুলি একাধিকবার জানিও কোনো লাভ হয়নি, তাই আজ বোর্ড মিটিং আটকাতে বাধ্য হয়েছি। এদিন এই কাউন্সিলর আরো অভিযোগ করেন যে, পৌর প্রধান তার ওয়ার্ডে কোনো উন্নয়ন হতে দিচ্ছে না। বারবার পৌর প্রধানকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। ফলে এলাকার মানুষ তাকেই দোষারোপ করছেন। তাই তিনি বাধ্য হয়ে এই পদক্ষেপ করেছেন।
অপর দিকে পুরপ্রধান রমেন দাস বলেন, “একাধিকবার ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। বোর্ড মিটিং- এ ডেকেছি, কিন্তু ও আসেনি। নাটক করার জন্য এসব করে। মকসুদ বারবার এই এক জিনিস করে বোর্ড মিটিং করতে বাধা দেয়। এটা সম্পূর্ণ অন্যায় একটা ঘটনা। আমি চাই না পুলিশ প্রসাশনকে পৌর সভায় এনে ওকে হেনস্তা করতে। তাই ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি বারবার।”
তবে দীর্ঘক্ষণ এই বচসা চলার পর অবশেষে বোর্ড মিটিং শুরু করেন পৌর প্রধান।