আমাদের ভারত, ২৫ জুলাই: সাম্প্রতিক সময় সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক শব্দ দুটি বাদ দেওয়া হোক বলে যে দাবি উঠেছে, তা নিয়ে লিখিত জবাবে সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়াল বলেছেন, এই নিয়ে তর্কবিতর্ক চলতেই পারে, কিন্তু সরকারিভাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা বদলানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্র শব্দ দুটি প্রস্তাবনায় যুক্ত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে জরুরি অবস্থার সময় এটি যুক্ত করা হয়েছিল। আরএসএস এই শব্দগুলিকে ভারতীয় সংস্কৃতির বিরোধী বলে দাবি করেছিল। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার পর বহু সংশোধনী বাতিল হয়েছিল, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতান্ত্রিক শব্দ দুটি থেকে গিয়েছিল প্রস্তাবনায়।
সম্প্রতি বিতর্কটি নতুন করে শুরু হয়েছে। ওই শব্দ দুটি নিয়ে ফের আপত্তি উঠেছে। আরএসএস- এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলের বক্তব্য, জরুরি অবস্থার সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার অসংবিধানিক ভাবে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতান্ত্রিক শব্দ দুটি যোগ করেছিলেন। তাই দুটি শব্দ বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
গত জুন মাসে দিল্লিতে জরুরি অবস্থার ৫০ বছর শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি বলেছিলেন, জরুরি অবস্থার সময় কংগ্রেস গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে শব্দ যুক্ত করা হয়েছিল তা কি আর বহাল রাখা উচিত? এই কথা বলার পর এই বিষয় সদ্য প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও বলেছিলেন, ভারতের সংবিধান ছাড়া অন্য কোনো সংবিধানের প্রস্তাবনা কখনো পরিবর্তিত হয়নি, কারণ সংবিধানের প্রস্তাবনা অপরিবর্তনযোগ্য। কিন্তু আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনা জরুরি অবস্থার সময় ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংবিধান সংশোধনী আইন দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছিল। সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং অখন্ডতা শব্দগুলি যুক্ত হয়েছিল। এটা নিয়ে আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে।
এদিকে এই নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছিল বিরোধীরা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, আরএসএস, বিজেপি সংবিধান চায় না, ওরা মনুস্মৃতি চায়। কিন্তু সেই বিতর্কে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিল কেন্দ্র।