সুশান্ত ঘোষ, বনগাঁ, ২৩ এপ্রিল: দীর্ঘ দিন লকডাউনের ফলে কাজ বন্ধ। অর্থের অভাবে খাদ্য ও ওষুধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে আর্সেনিক আক্রান্ত ৫২টি পরিবার। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার বিষ্ণুপুর গ্রামে মাঠপাড়া এলাকায় এমনই অবস্থা। একটি সংগঠন থেকে এক দিন ত্রাণ পেলেও পায়নি ওষুধ কেনার টাকা। সরকারী সাহায্য বলতে রেশনের দু’কেজি চাল আর গম।
বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রামানিক বাড়িতে চার ভাই আর্সেনিকে আক্রান্ত। এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে কয়েক বছর আগে। এইরকম উদাহরণ প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। এই মাঠপাড়ায় ৫২ টি পরিবার আর্সেনিক আক্রান্ত, প্রতিটি বাড়িতে এক বা দুইজন করে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী রয়েছে। গত ৪০ বছর ধরে আর্সেনিক এলাকা বলে পরিচিত এই গ্রাম। অনেকে বিষ্ণুপুর গ্রামের এই পাড়াটি আর্সেনিক পাড়া বলে উল্লেখ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারগুলির প্রতিটি বাড়ির সদস্য দিনমজুরের কাজ করেন।
একদিকে পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব, অন্যদিকে পানীয় জলের সমস্যা। এই দুই যাঁতাকলে পড়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করেন এই এলাকার মানুষ। করোনা ভাইরাস কারণে লকডাউন চলছে। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন এই পরিবারগুলি। একদিকে যেমন কোন কাজ নেই, অন্যদিকে খাবার নেই। তারপর আর্সেনিক রোগীদের পুষ্টিকর খাদ্য ও প্রচুর ওষুধ খেতে হয়। চরম সমস্যায় দিন কাটছে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীদের।

আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটির রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বলেন, লকডাউন এর ফলে বহু আর্সেনিক রোগী খাদ্য ও ওষুধ জোগাড় করতে পারছেন না। তাঁরা বিনা চিকিৎসায় আছেন। অবিলম্বে রাজ্যের সমস্ত আর্সেনিক আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসার দাবি জানায় আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটি। দ্রুত সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অনেক আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৩ টি ব্লকের মধ্যে ২২ টি ব্লক আর্সেনিক কবলিত। জেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষ আর্সেনিক দূষিত জল খেতে বাধ্য হয়। ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ ভীষণ অসুস্থ আর্সেনিক বিষক্রিয়ায়। আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীদের ওষুধের ব্যবস্থা না করতে পারলে চরম সমস্যায় পড়বে এরা।

