পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৮ ডিসেম্বর: সমবায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ালো নন্দীগ্রামে। বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, হাতাহাতি বাদ গেল না কিছুই। রবিবার বেলার দিকে এই ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নন্দীগ্রাম ১নং ব্লকের কাঞ্চননগর গ্রামে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পুলিশের সামনেই রীতিমতো বোমাবাজি চলতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী। পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এই ঘটনার জেরে ভোট গ্রহণ বেশ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তমলুকের জনপ্রিয় এগ্রিকালচার সোসাইটির নির্বাচন আয়োজিত হচ্ছে জেলা জুড়ে। এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল ও বিজেপি। নন্দীগ্রামে এই সমবায়ের ৭টি আসন রয়েছে, যেখানে সব মিলিয়ে ২২ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নন্দীগ্রামে এই সমবায়ের নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে ১নং ব্লকের কাঞ্চননগর হাইস্কুলে। সকাল থেকেই এই ভোটগ্রহণ ঘিরে চাপা উত্তেজনা ছিলই। তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াইয়ে চারিদিকে দলীয় পতাকায় ছেয়ে দেওয়া হয়। তারই মাঝে ভোটগ্রহণ পর্ব বেশ কিছুক্ষণ চলার পরেই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি ও তৃণমূলের লোকেরা বুথের আশপাশে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে থাকে। এরপরেই আচমকা শুরু হয়ে যায় ব্যাপক বোমাবাজি। দুই পক্ষ্যের মুহূর্মুহূ বোমা ছোড়ার শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় ছুটে যায়। বিজেপির দাবি, পুলিশের সামনেই দুষ্কৃতীরা নির্দ্বিধায় বোমাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় ছুটে যান তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ বর্তমানে বিজেপির নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে তিনি বোমাবাজির এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়ান। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নামে।দীর্ঘ চেষ্টার পর বোমাবাজি কিছুটা থামলেও উত্তেজক পরিস্থিতি থাকায় বহু ভোটার আর বুথ মুখো হতে চাননি।
এই বিষয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল জানান, “গতকাল থেকে বুথ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ১০০ মিটারের বাইরে ক্যাম্প করার কথা বলা হয়েছে। অথচ সেখানে রীতিমতো প্রহসন করছে তৃণমূল। পুলিশের সামনেই ব্যাপক বোমাবাজি করল ওরা। আমাদের এক নেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার জেরে আমি নিজেও আমার ভোটটা দিতে পারিনি”। তাঁর দাবি, “নন্দীগ্রামের ভোটারদের ওপর তৃণমূলের আস্থা নেই বলেই এমন বোমাবাজি করছে”। তবে এই ঘটনায় তৃণমূলের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা দেবপ্রসাদ মাইতি জানান, “আমরা দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। সেই সময় আচমকাই বোমা ছোঁড়া হল। অল্পের জন্য আমরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। কিছুটা দূরেই স্কুলের মধ্যে ভোট গ্রহণ চলছিল। সেই নিয়েই হয়তো এত বোমাবাজি। এই ঘটনায় আমরা এলাকাবাসীরা রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।”